ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়মপ্রিয় পাঠক, আপনি কি ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলে যাচ্ছেন। যদি ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কি কি কাগজ লাগে এ সম্পর্কে যদি না জেনে থাকেন তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আজকের পোস্টটিতে আমরা আপনাদের জন্য ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক ও ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কি কি কাগজ লাগে এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করব। এর ফলে আপনারা ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক করতে পারবেন এবং টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন।
ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক
আপনারা যদি ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট করতে চান তাহলে কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট এর প্রয়োজন হয় যা আপনাদের জানা দরকার। এজন্য আমরা ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য যে যে ডকুমেন্ট প্রয়োজন তা সম্পর্কে আলোচনা করছি। তাছাড়াও ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক করতে পোস্ট পড়ুন।

পেজ সূচিপত্রঃ

ভূমিকা। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক

ইসলামী ব্যাংক মূলত ইসলামের আইন অনুযায়ী প্রচলিত একটি ব্যাংক।ইসলামী আইন মূলত ইসলামের ধর্মগ্রন্থ কুরআন এবং সুন্নাহর উপর ভিত্তি করে আইন। এখানে সুদ, জুয়া এবং লুটপাটকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাহলে বুঝতে পারছেন আপনি যদি ইসলাম প্রিয় হয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে চাইবেন। ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে চাইলে আপনি তিন ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।
  • Current account
  • Savings Account
  • Student account
কারণ এই ব্যাংকে সকল ধরনের অবৈধ কাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখানে মূলত ইসলামের আইন অনুযায়ী ব্যাংক পরিচালনা করা হয় যেখানে কোন সুদ, ঘুষ , জুয়া ও লুটপাটকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই আপনারা নির্দ্বিধায় ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারেন।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট সুবিধা

আপনারা কি জানেন ইসলামী ব্যাংকিংয়ের সুবিধা রয়েছে যা আপনারা জানলে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে চাইবেন। কেননা এই ব্যাংক সকল ধরনের অনৈতিক ও ইসলামী বিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকে। এখানে ইসলাম আইন অনুযায়ী পরিচালনা করা হয়। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ইসলামী ব্যাংক কি কি সুবিধা দিয়ে থাকে।
  • ইসলামী ব্যাংক মূলত সুদমুক্ত যা আমাদের ইসলামের পথে চলতে সাহায্য করে এবং অর্থ সাশ্রয় করতে পারে।
  • ইসলামী ব্যাংক ইসলামের নীতি ও আইন অনুযায়ী পরিচালনা হয় যা অনেক মুসলমান ভাইদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  • ইসলামী ব্যাংক সুদ মুক্ত এবং ইসলাম অনুযায়ী পরিচালনার ক্ষেত্রে নিরাপদ ভাবে ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যায়।
  • ইসলামী ব্যাংক ইসলাম অনুশাসন মেনে চলে এবং এই ব্যাংক লাভজনক হতে পারে আমাদের জন্য।
  • আপনি যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে এটিএম চার্জ দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
  • তাছাড়া অনলাইনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন।
  • অনলাইনের মাধ্যমে মাত্র ১০০ টাকা মাধ্যমে একাউন্ট খুলতে পারবেন বিশেষ করে যারা স্টুডেন্ট।
  • যেকোনো প্রান্তে অর্থাৎ যে কোন শাখায় টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন।
  • নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার উপর লাভ পাওয়া যায়।
  • মূল কথা আপনারা স্বল্প টাকায় এই ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক

আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন কিভাবে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক করবেন। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক করার মাধ্যমে আপনি ব্যাংকের স্টেটমেন্ট, ব্যাংক ডিটেলস, ব্যাংক হিস্টরি এবং টাকার পরিমান দেখতে পারবেন। এই অ্যাকাউন্ট চেক করার জন্য আপনি দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।
  • মোবাইলে অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে
  • ইসলামী ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে
এ দুটি মাধ্যমে আপনি ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট দেখতে পারবেন। যদি আমরা মোবাইলে কথায় আসি তাহলে আপনি প্রথমে গুগল প্লে স্টোর থেকে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট এর অ্যাপ্লিকেশনটি সার্চ করে ডাউনলোড করে নিন এবং ইন্সটল করুন। তারপর আপনার মোবাইল থেকে অ্যাপ্লিকেশনটি ওপেন করুন।

ওপেন করার পর আপনার প্রয়োজনীয় ইসলামী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাপ্লিকেশনটি লগইন করুন। এবার অতি সহজে আপনার ব্যাংকের সকল ডিটেলস দেখতে পারবেন।এবার কথায় আসি আপনি যদি মোবাইলে ইসলামী ব্যাংক এপ্লিকেশন ব্যবহার না করে আপনার একাউন্ট দেখতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে ইসলামী ব্যাংক এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
এর জন্য আপনি আপনার ফোনে যে কোন ব্রাউজারে গিয়ে ইসলামী ব্যাংকের ওয়েবসাইটটি সার্চ করে প্রবেশ করুন। এবার আপনার সামনে লগইন করার জন্য ব্যাংকের একাউন্ট নাম্বার ও পিন নাম্বার চাইবে আপনি সেটি দিয়ে লগইন করুন তাহলেই আপনি অ্যাপ্লিকেশন ছাড়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যাংকের ডিটেইলস চেক করতে পারলেন।

ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কি কি কাগজ লাগে

আপনারা তো ইসলামী ব্যাংক খুলতে চাচ্ছেন। তাহলে এই ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি ডকুমেন্টের প্রয়োজন হবে তা তো জানা দরকার যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই অংশটি ভালো করে পড়ুন। চলুন জেনে নেই।
  • আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড থাকতে হবে।
  • ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য ব্যাংকের থেকে একটি ফরম সংগ্রহ করতে হবে এবং ফর্মটি পূরণ করে জমা দিতে হবে।
  • যিনি ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন তার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, জন্ম সনদের ফটোকপি বা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফটোকপি যে কোন একটি দিতে হবে।
  • আবেদনকারী যদি বয়স ১৮ বছরের নিচে হয় হলে জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি এবং মাতা পিতার জাতীয় পরিচয়পত্র ফটো কপি দিতে হবে।
  • যিনি ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন তার পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি এবং নমিনি হবেন তার দুই কপি ছবি লাগবে।
  • আপনি যদি সেভিংস একাউন্ট খুলেন তাহলে ৫০০ টাকা জমা দিতে হবে যেটি আপনার একাউন্টে জমা থাকবে।
  • আর অনলাইনে ব্যাংক একাউন্ট দেখতে চাইলে তো জানেনই যে ইমেইল ঠিকানা ও ব্যাংকের জন্য পিন নাম্বার সেট করতে হয়।
  • তাছাড়াও আরো কাগজপত্র বর্তমানে লাগতে পারে যা আপনারা ওদের ওয়েবসাইটে গিয়ে কথা বললে জানতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার পর করণীয়

ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার পর কিছু করণীয় রয়েছে যা আপনাদের জানা উচিত চলুন করনীয় এগুলো জেনে নেওয়া যাক।
  • ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা হলে একাউন্টের সাথে প্রয়োজনীয় যেমন একাউন্টের চেক বুক এবং যদি কার্ড দেয় তাহলে সেটি সংগ্রহ করুন।
  • অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স চেক করুন এবং একাউন্টের স্টেটমেন্ট বা ডিটেইলস গুলি পর্যবেক্ষণ রাখুন।
  • আপনার কোন সমস্যা হলে ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
  • যে পরিমাণ টাকা রাখবেন তার উপর নির্দিষ্ট করে লাভ অংশ দিয়ে থাকে সেটি সংগ্রহ করুন।
  • বিভিন্ন ধরনের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিয়ে থাকে এই ইসলামী ব্যাংক।
তাহলে আপনারা ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার পর করণীয় কি এবং ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আজকের এই পোস্টে জানতে পেরেছেন।

শেষ কথা। ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা হয়তো এতক্ষণ ধরে ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কিত সকল কিছু জানতে পেরেছেন। এই ব্যাংকটি ইসলামী অনুশাসন অনুযায়ী পরিচালনা করা হয় যাতে সকল ধরনের অবৈধ কাজ নিষিদ্ধ করা হয় এবং এই ব্যাংকগুলি ইসলাম অনুযায়ী বিভিন্ন হালাল ব্যবসায় বিনিয়োগ করে এবং আমাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ লাভাংশ দিয়ে থাকে। তাহলে আপনার এতক্ষণে ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট চেক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন।

তাই আপনি যদি ইসলাম প্রিয় হয়ে থাকেন এবং সঠিক পথে টাকা জমা রাখতে চান তাহলে ইসলামী ব্যাংক এ একাউন্ট খুলতে পারেন। এর জন্য কি কি ডকুমেন্ট বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন হবে তা আমরা উপরে আলোচনা করেছি। আশা করছি বুঝতে পারছেন। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

Post a Comment

Previous Post Next Post