সারা গায়ে চুলকানি ঔষধপ্রিয় পাঠক, আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে কিডনি রোগীর খাবার তালিকা ও কিডনি রোগের ঔষধের নাম গুলো সম্পর্কে আলোচনা করবো। আপনি যদি কিডনি রোগীর খাবার তালিকার বিষয়ে না জেনে থাকেন তাহলে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযগ সহকারে পড়ে জেনে নিন।
কিডনি রোগীর খাবার তালিকা
কিডনি হলো আমাদের শরীরের একটি অত্যাবশ্যকিয় অঙ্গ। যেটা ভালো রাখার দায়িত্ব সম্পূর্ণটাই আমাদের। আর তার জন্য আমাদেরকে ভালো ধরণের ফলমূল খেতে হবে অবশ্যই।

পোস্ট সূচিপত্রঃ

ভূমিকা

আমরা যেসকল খাবারই খাবো না কেন সেটা আমাদের দেহের মধ্যে প্রতিফলিত হবে। আমাদের নিত্যদিনের খাদ্যাভ্যাস আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে অনেক প্রভাবিত করে থাকে। তেমনি শরীরের অনেক অঙ্গগুলোর মতো কিডনি ও একটি। যেটা আমাদের শরীরের অপ্রয়োজনিয় সকল কিছু ছেকে বের করে দেয়। এছাড়াও কিডনি ইলেকট্রোলাইটস এর সাথে অন্য সকল তরল উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখে।

আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকেন তাহলে আপনি কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তিগণ কোন সকল ফন খেতে পারবে, কিডনি রোগের সকল ঔষধের নাম, কিডনি রোগিরা দুধ খেতে পারবে কিনা এই সকল কিছু সহ আরো অনেক তথ্য জানতে পারবেন। তাই শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

কিডনি রোগীর খাবার তালিকা

যারা কিডনি রোগে আক্রান্ত রয়েছেন তাদের অবশ্যই কিডনি রোগীর খাবার তালিকা সম্পর্কে জানা উচিত। আপনি যদি একজন কিডনি রোগী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত সেই সকল সম্পর্কে জানতে হবে। আর কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত না আপনার জন্য সেটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে সেগুলো সম্পর্কেও জানতে হবে। আপনি যদি এই সম্পর্কে অবগত না হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এখন জেনে নিন।
কিডনি রোগীর খাবার তালিকা
কিডনি রোগ হলে একটি সাধারন রোগের মত সমস্যা। যেটা গোটা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০% মানুষের মধ্যেই হয়ে থাকে। কিডনি আমাদের শরীরের অন্য সকল অঙ্গ পতঙ্গের মতনই ছোট একটি অঙ্গ। যেটা দেখতে খুব বড় নয়। বড়জোর একটি সিমের বিচির মত আকৃতির হয়ে থাকে। এতে আকারে ছোট হলে আরো অনেক কাজ রয়েছে। যেটা আমাদের শরীরের জন্য মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

আপনি যদি একজন কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত হবে অথবা কোন কোন খাবার অবশ্যই খেতে হবে সেগুলো নিম্নে বর্ণনা করা হল।

ডিমের সাদা অংশঃ যে সকল ব্যক্তিগণ কিডনি রোগে আক্রান্ত রয়েছেন তাদের সকলের জন্য ডিমের ভিতরের সাদা অংশ খাওয়া অবশ্যই উচিত। আপনি যদি এই ডিমের ভেতরে সাদা অংশ খান তাহলে আপনার শরীরের রক্তচাপ অনেক নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। এই ডিমের ভেতরে সাদা অংশ আপনি যদি নিয়মিত খান তাহলে আপনার শরীরের ভেতরে আমেজ প্রচুর পরিমাণে প্রবেশ করবে।

এছাড়াও ডিমের ভেতরে সাদা অংশে রয়েছে বিভিন্ন উপকারী উপাদান। সেগুলো হল সোডিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম। ডিমের ভেতরে সাদা অংশ খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে এ সকল উপাদান প্রবেশ করবে। যার ফলে আপনার কিডনির রোগ খুব দ্রুত নিরাময় হয়ে যাবে।

রসুনঃ আপনি যদি কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন আর আপনি যদি নিয়মিত রসুন খান তাহলে আপনার কিডনির রোগ খুব সহজেই সারিয়ে তোলা সম্ভব। এর রসুনের ভেতরে কিডনি রোগের জন্য কিছু উপকারী উপাদান রয়েছে। সেগুলো হল ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, এবং ভিটামিন বি। এ ছাড়া রয়েছে অসংখ্য ওষধি গুনাগুন।

বাঁধাকপিঃ বাঁধাকপিতে ভিটামিনের প্রায় বেশিরভাগ উপাদানই রয়েছে। যেমন ভিটামিন বি, ভিটামিন কে এবং ভিটামিন সি। আপনি যদি বাঁধাকপি খান তাহলে আপনার কিডনির রোগ খুব সহজেই মুক্তি হয়ে যাবে। একজন ব্যক্তি যদি নিয়মিত বাঁধাকপি খায় তাহলে কিডনির রোগ থেকে দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব।
পেঁয়াজঃ কিডনি রোগ নিরাময়ের জন্য রসুনের পাশাপাশি পেঁয়াজো অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। যার ভেতরে কিডনি রোগ সারিয়ে তোলার উপাদানের ভিতরে রয়েছে ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি। আপনি যদি কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই প্রতিদিন নিয়মিত পেঁয়াজ খান। আশা করছি খুব দ্রুতই আপনার কিডনির রোগ নিরাময় হয়ে যাবে।

আনারসঃ কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য আনারস অনেক উপকারী একটি খাবার। আনারসের মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি এবং ফাইবার। নিয়মিত আনারস খাবার ফলে খুব দ্রুত কিডনি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আপনি যদি নিয়মিত আনারস খান তাহলে কিডনির দুর্বলতা গুলো খুব সহজে দূর হয়ে যাবে।

উপরে উল্লেখিত এই সকল খাবার খাওয়ার ফলে আপনি কিডনি রোগ থেকে খুব দ্রুতই নিরাময় পেয়ে যাবেন। এই সকল খাবারের পাশাপাশি আপনাকে কিছু খাবার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। সেই সকল খাবার গুলো কোনগুলো সেগুলো সম্পর্কে এখন আমরা আপনাদেরকে জানাবো। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক।

আমিষ জাতীয় খাবারঃ কিডনি রোগীর খাবার তালিকার মধ্যে একটি হলো আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়া। আপনি যদি কিডনি বিকল অথবা কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রোটিন অথবা আমি জাতীয় খাবার তুলনামূলক অনেক কম খেতে হবে। আমি যদিও সকল খাবারের মধ্যে রয়েছে মুরগির মাংস গরুর মাংস অথবা যে কোন প্রকারের মাংস তুলনামূলক অনেক কম খেতে হবে।

খাবার লবণঃ আপনারা যারা খাবারের সাথে অতিরিক্ত খাবার লবণ খেয়ে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই খাবারের রোদে রাইতে লবণ পরিহার করে চলতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যতে আপনার শরীর নিয়ে অনেক বিপত্তি দেখা দিতে পারে।

ফল ও শাকসবজিঃ আপনারা এমন অনেকে রয়েছেন জিনারা মনে করে থাকেন কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সকল ধরনের ফল অথবা শাকসবজি খাওয়া নিষেধ। আসলেই ধারণাটি একদম ভুল। যদি কোন কিডনি আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের রক্তের ভেতরে পটাশিয়ামের মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে থাকে অথবা কিডনির জিএফআর এর মাত্রা যদি তিরিশের কম হয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ সকল খাবারগুলো কম পরিমাণে খেতে হবে।

এই অবস্থায় আপনি যে সকল খাবারগুলো খেতে পারবেন সেগুলো হলো
  • আপেল
  • আঙুর
  • পেয়ারা
  • নাশপাতি
  • জাম
  • তরমুজ
কিডনি রোগে আক্রান্ত থাকা অবস্থাতেও আপনি এই সকল খাবারগুলো গ্রহণ করতে পারেন। কারণেই ফলগুলোতে পটাশিয়ামের মাত্রা অন্যান্য সকল ফলগুলোর তুলনায় অনেক কম থাকে। তবে অবশ্যই মাত্রাতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো। অবশ্যই সব সময় চেষ্টা করবেন পরিমাণ মত সকল খাবার গুলো গ্রহণ করার।

ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডিঃ কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির কিডনির জিএফ আর এর মান যদি ৬০ এর নিচে হয়ে থাকে তাহলে আপনি দিনে ১০০০ গ্রামের বেশি ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন না। ছয় মাস অন্তর আপনার রক্তের ক্যালসিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা করে নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজন হলে এই সকল খাবার গুলো গ্রহণ করবেন।

কিডনি রোগী কি কি ফল খেতে পারবে

ইতিপূর্বে আমরা তো সকলে কিডনি রোগীর খাবার তালিকাগুলো সম্পর্কে জানতে পারলাম। এই পর্যায়ে আমরা সকলে জানতে চলেছি কিডনি রোগীরা কোন কোন ফল খেতে পারবে। আসলে আমাদের সকলেকেই কিডনি ভালো রাখার জন্য খাবারের দিকে অনেক নজর ধরে। রাখতে হয় কারণ এই সকল খাবারগুলি আমাদের শরীরের ভেতরে প্রভাব ফেলে।
কিডনি রোগী কি কি ফল খেতে পারবে
এমন অনেক ফল রয়েছে যেগুলোকে নিয়ে জন্য অনেক ক্ষতি করে। সে সকল খাবার খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। এ পর্যায়ে আমরা জানতে চলেছি এমন অনেক ফল গুলোর নাম সম্পর্কে যেগুলো খেলে কিন্তু অনেক ভালো থাকে। এবং কিডনিতে পাথর জমার কোন আশঙ্কা থাকে না। চলুন তাহলে এখন আমরা সেই সকল ফলগুলো সম্পর্কে জেনে নেই।

সাইট্রাস জাতীয় ফলঃ সাইট্রাস জাতীয় ফল অবশ্যই আপনি গ্রহণ করবেন। এই সকল ফল দেখতে যেমন ভালো তেমনি খেলেও অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা হয়েছে। তবে এই সকল ফলে ভিটামিন সি এর পরিমাণ একটু বেশি থাকে। এছাড়াও আরো অনেক উপাদান এই জাতীয় ফলে থাকে। সেগুলো হলো ভিটামিন বি, ফসফরাস, পটাশিয়াম, মেগনেসিয়াম, ভিটামিন সি এবং কপার।

এই সাইট্রাস জাতীয় ফলের মধ্যে রয়েছে
  • লেবু
  • কমলা
  • মাল্টা
  • জাম্বুরা
  • আমলকি
  • আঙুর
বেরি জাতীয় ফলঃ এই জাতীয় ফলে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং তার পাশাপাশি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপকরণ থাকে। এই উপকরণগুলো আমাদের শরীরের ভেতরে প্রধান জনিত সকল সমস্যা কমানোর জন্য কাজ করে। যার জন্য শরীরের সকল কোলেস্টেরল ক্ষতিকারক পদার্থের মাত্রা অনেক কমে যায়।
এই জাতীয় ফলের মধ্যে রয়েছে
  • ব্লুবেরি
  • স্ট্রবেরি
বেদানাঃ অনেক বিশেষজ্ঞ জানান আপনি যদি নিয়মিত বেদানা খান তাহলে আপনার স্মৃতি শক্তি অনেক প্রকার হবে। সেই সাথে সাথে আমাদের শরীরের রক্তের অভাবের পরিমাণ অনেক হ্রাস করবে। বেদানাতে প্রায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যার ফলে সহজে আমাদের কিডনিতে পাথর যন্ত্রণা দেয় না। যেহেতু কিডনিতে পাথর জমতে দেয় না তাই আমাদেরকে নিয়ে অনেক ভালো থাকবে।

পানি পান করুনঃ প্রতিদিন অনেক বেশি পরিমাণে পানি পান করুন। যদিও এটি ফলের তালিকায় নেই তবুও বলা অনেক জরুরী। কারণ আপনি যদি কিডনি ভালো রাখতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। আপনি প্রতিদিন অন্তত সাড়ে তিন লিটার পানি পান করার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার কিডনি অনেক ভালো থাকবে। আর আপনি অনেক সুস্থও থাকবেন।

কিডনি পরিষ্কার করে এই ৯ খাবার

কিডনি রোগীর খাবার তালিকার মধ্যে এমন নয়টি খাবার হয়েছে যেগুলো কার মাধ্যমে আপনি আপনার কিডনিকে খুব ভালোভাবে পরিষ্কার রাখতে পারবেন। কেননা আমরা যা খাই তাই আমাদের স্বাস্থ্যের ভেতরে প্রতিফলিত হয়। যার ফলে অন্য সকল অঙ্গের মতন কিডনিতে সুরক্ষার জন্য বিশেষ কিছু খাবার খাওয়া দরকার। এই সকল খাবার গুলো কোনগুলো সেগুলো সম্পর্কে আমরা সকলে এখন জানব।

আমাদের দেহে কিডনির প্রধান কাজ হল আমাদের দেহের মধ্যে থেকে সকল প্রকার বর্জন নিষ্কাশন করা। এবং সাথে সাথে ক্ষতিকর সকল পদার্থ তার সাথে শরীরের অতিরিক্ত পানি বের করে দেওয়া। তাই এই সকল কার্যপ্রক্রিয়া সচল রাখার জন্য আমাদের মানুষের দেহের মতনই কিডনি রোগ খাবারের যোগান দেওয়া দরকার। কিডনি সুস্থ রাখে এবং পরিষ্কার করে যে নয়টি খাবার সেগুলো হল

সবুজ শাকসবজিঃ আপনাকে প্রতিদিন নিয়মিত সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। এই সবুজ শাকসবজিতে বেশিরভাগ পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন সি, ফাইবার, ভিটামিন কে, এছাড়াও রয়েছে অসংখ্য ফলিক এসিড। যেগুলো আমাদের শরীরের রক্তচাপ খুব সহজেই কমায়। তার পাশাপাশি কিডনির জটিলতা কমায় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।

আদাঃ আপনি যদি আপনার কিডনিকে পরিষ্কার এবং আরো কার্যকরী করতে চান তাহলে অবশ্যই আদা খান। কেননা কিডনিকে পরিষ্কার এবং ভালো রাখার জন্য আরো অনেক বড় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আধা কিডনিতে থাকা রক্তের চলাচল বৃদ্ধি করে দেয় তার পাশাপাশি কি লিখে সচল এবং সুস্থ রাখার জন্য সাহায্য করে। যার ফলে কিডনির কার্যক্ষমতা বহু গুনে বৃদ্ধি পায়।

হলুদঃ হলুদ আমাদের শরীরের এনার্জি থেকে ত্বকের সুরক্ষা রাখে তার পাশাপাশি তথ্য অনেক পরিষ্কার রাখি এটা আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু আপনারা তো জানেন না ও হলুদ এলার্জির পাশাপাশি কিডনি রক্ষাকে বিশেষ ভূমিকা রাখে। আপনি যদি নিয়মিত হলুদ খান তাহলে আপনার ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে। সেই সাথে সাথে শরীরের কিডনি ও অনেক পরিষ্কার থাকবে।

আপেলঃ আমরা হয়তো সকলেই শুনে থাকবো যেটার লোকও কথায় প্রচলিত রয়েছে যে " যদি ডাক্তারকে দূরে রাখতে যান তাহলে প্রতিদিন একটি করে আপেল খান"। কেননা আপেল অনেক আঁশযুক্ত খাবার। যেটা আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল দূর করার পাশাপাশি হৃদরোগ প্রতিরোধ করার কাজ করে থাকে। এছাড়া এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি ও অনেক পরিমাণে কমায়। তাই প্রতিদিন আপেল রান্না করে কাঁচা অথবা জুস খাওয়ার চেষ্টা করুন এক গ্লাস।
লেবুর শরবতঃ আপনি যদি প্রতিদিন লেবু জল খেতে পারেন তাহলে আপনার কিডনি পরিষ্কার থাকবে খুব সহজেই। লেবুতে বিভিন্ন ধরনের উপকারী উপাদান রয়েছে। যেগুলো আমাদের কিডনির জমা পাথর ভাঙ্গার জন্য অনেক বেশি কার্যকরী।

ক্যানবেরি জুসঃ এই ক্যানবেরি হলো চেরি ফলের মতোই এক ধরনের ফল। এই ফলেও প্রচুর মাত্রার ভিটামিন সি এবং ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। এ দুটি ফলিক উপাদান আমাদের কিডনির ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনি যদি নিয়মিত এই ক্যানবেরি জুস খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার মূত্রথলির সংক্রমণ কমাবে খুব সহজেই। সেই সাথে সাথে এটি আমাদের কিডনি ও অনেক পরিষ্কার রাখবে।

রসুনঃ আমরা সকলে জানি রসুনের অনেক উপকারিতা রয়েছে। তেমনি রোশন আমাদের শরীরের ইনক্রিমেন্টারি আর কোলেস্ট্রল কমানোর জন্য অনেক বেশি কার্যকর। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে এক কোয়া করে কাঁচা রসুন খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার হার্টকে ভালো রাখার পাশাপাশি কিডনিকেও অনেক ভালো রাখবে।

চর্বিযুক্ত মাছঃ সামুদ্রিক অনেক মাস রয়েছে যেগুলো আমাদের কিডনিরপত্র অনেক স্বাস্থ্যকর। সেই সকল মাছের ভেতর রয়েছে স্যামন, টুনা এই জাতীয় মাছ। ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশনের একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, ওমেগা -৩ চর্বি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ফলে সেটি আমাদের রক্তের চর্বি কমানোর জন্য এবং রক্তচাপকে কমাতে অনেকটাই সাহায্য করে থাকে।

অলিভ অয়েলঃ গবেষণার মাধ্যমে উঠে এসেছে যে প্রতিদিনে আমরা যে রান্না করা খাবারের তেল ব্যবহার করি সবথেকে বেশি স্বাস্থ্যকর হয় যদি আমরা অলিভ অয়েল ব্যবহার করি। কারণ এতে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ফ্যাটি এসিড রয়েছে যেটি আমাদের কিডনি সুস্থ থাকতো অনেক সহযোগিতা করবে। তার পাশাপাশি ক্যান্সার ঝুঁকি প্রতিরোধ করবে।

কিডনি রোগের ঔষধের নাম

কিডনি রোগীর খাবার তালিকা জেনেও আপনি কি কিডনি রোগ নিয়ে চিন্তিত? অথবা আপনাকে কিডনি রোগের সকল ঔষধ গুলোর নাম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলের এই টপিকটি আপনারই জন্য। কেননা এখন আমরা আলোচনা করতে চলেছি কিডনি রোগের জন্য কোন কোন সকল ঔষধ খেতে হবে সেগুলোর নাম সম্পর্কে। চলুন তাহলে আর বেশি দেরি না করে কিডনি রোগের সকল ঔষধের নাম গুলো জেনে নেওয়া যাক।
কিডনি রোগের ঔষধের নাম
কিডনির যে রোগটি রয়েছে এই রোগটি ক্রনিক রেনাল রোগ নামেও পরিচিত। এই রোগটির জন্য কিছু অস্পষ্ট উপসর্গ দেখা যায়। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ষুধা হ্রাস পাওয়া এবং অসুস্থ বোধ করা। এছাড়াও আরো অনেক অস্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায় এই রোগে। এই রোগটি সবথেকে বেশি দেখা যায় যে সকল ব্যক্তিগণ ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে।

এই ক্রনিক কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য সব থেকে আদর্শ উপায় হল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নেওয়া। আপনি যদি হোমিও পদ্ধতিতে চিকিৎসা নেন তাহলে এর অর্থ হল প্রাকৃতিক সকল উপাদান দিয়ে প্রাকৃতিক পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে রোগের সমস্ত কারণ উপসর্গ নিরাময় করার চেষ্টা করা।

নিম্নে কিছু হোমিওপ্যাথি ঔষধ এর বিবরণ দেওয়া হলো যেগুলো আপনি আপনার কিডনি রোগটি নিবারণ করার জন্য ব্যবহৃত করতে পারেন। তবে এজন্য অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত হবে। তো চলুন এখন আমরা হোমিওপ্যাথি কিডনি রোগের ওষুধ গুলোর নামগুলো জেনে নেই।

এপিস মেলিফিকাঃ এই ওষুধটি যখন কিডনির রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তখন ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে যখন লক্ষণ গুলির মধ্যে অতিরিক্ত পরিমাণে ঘাম হওয়া, মাথাব্যথা করা, ঘাড়ে ব্যথা করা ইত্যাদি ধরনের এই সকল লক্ষণগুলি প্রকাশ পায় তখন এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া যখন কিডনিতে অল্প পরিমাণে ব্যথা হয় অথবা প্রসাবের পরিমাণ কম হয় সেই সময় এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়।
আর্সেনিকামঃ এই হোমিওপ্যাথি ওষুধে রোগের সকল পর্যায়ে ব্যবহার করা হয়। এটি কিডনি রোগের সকল ঔষধ গুলোর মধ্যে সর্বোত্তম একটি প্রতিকার ঔষুধ।

অরাম মুরিয়াটিকামঃ এই ওষুধটি ছাগলের দ্বারা হওয়া মরবুসব্রাইটির এর মত রেটন রোগের নিরাময় করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

বেলাডোনাঃ হোমিওপ্যাথিক এই ঔষুধটি কিডনির কটিদেশীয় অঞ্চলের সকল ব্যথা নিরাময় করার জন্য আদর্শ ওষুধ।

ক‍্যান্থারিসঃ নেফ্রাইটিস নিরাময়ে এই হোমিওপ্যাথিক ওষুধটি ব্যবহার করা হয়।

কোনাভ্যালারিয়াঃ যখন আমাদের শরীরের হৃদপিণ্ড সঠিকভাবে কাজ করে না তখন এই হোমিওপ্যাথি ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। হৃদরোগের দ্বারা নেফ্রাইটিস হওয়ার ফলে এই কোনাভ্যালারিয়া ওষুধটি ব্যবহার করা হয়।

উপরে উল্লেখিত এই সকল হোমিওপ্যাথি ঔষধ গুলো কিডনি রোগের জন্য অনেক ভালোভাবে ব্যবহার করা হয়। তবে এই সকল হোমিওপ্যাথি ওষুধ ছাড়াও আরো অনেকগুলো হোমিওপ্যাথি ঔষধ রয়েছে। সেগুলো হল
  • মাজুন কুন্দুর (Majun Kundur)
  • এ্যালকুলি (Alculi)
  • পামেট (Pamet)
  • জওয়ারিশ যরুনী (Jawarish Zarooni)
  • সূজার্ণ (Sujarno)
  • সফূফ আমলা (Safoof Amla)
  • জাবীন (Jabeen)
  • অরেঞ্জিন (Orangine)
  • সেলভিন (Cellvin)
  • নিমুলেন্ট (Nimulent)
সকলে কিডনির সকল প্রকার রোগের জন্য হোমিওপ্যাথিক ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ দীর্ঘদিন কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য হোমিওপ্যাথি ঔষধ অনেক কার্যকরী। তবে অবশ্যই আপনি হোমিওপ্যাথি ওষুধ গুলো ব্যবহার করার পূর্বে একজন হোমিও ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।

কি খেলে কিডনি ভালো থাকে

কিডনি রোগীর খাবার তালিকা জানার পরেই আমাদের জনার প্রয়োজন কি খেলে কিডনি ভালো থাকে?  আপনি কি জানেন শুধুমাত্র আপনার খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন করার মাধ্যমেই আপনার কিডনি আপনি নিজেই ভালো রাখতে পারেন। অন্যথায় আপনার কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে। কি খেলে কিডনি ভালো থাকে এই নিয়ে আমাদের অসংখ্য পোষণ থাকে। এখন আমরা জানাবো কোন কোন খাবার গ্রহণের মাধ্যমে আপনি আপনার কিডনি খুব সহজে ভালো রাখবেন। চলুন তাহলে এই সম্পর্কে দেখে নেই।

শাক-সবজিঃ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি খাওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার কিডনিকে ভালো রাখতে পারবেন খুব সহজেই। কারণ শাকসবজি জাতীয় সফল খাবারের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খাদ্য আঁশ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এছাড়াও আরও পর্যন্ত পরিমাণে জলীয় উপাদান থাকে। যেটা আমাদেরকে সুস্থ রাখার জন্য অনেক বড় ভূমিকা রাখে। এই সকল শাক সবজির ভেতরে রয়েছে
  • লাউ
  • ঝিঙা
  • পটোল
  • ঢেঁড়স
  • ধুন্দুল
  • চিচিঙ্গা
  • মিষ্টিকুমড়া
  • অঙ্কুরিত মুগডাল
  • ক্যাপসিকাম
  • আরো ইত্যাদি ধরণের খাবার।
উপরে উল্লেখিত এই সকল শাক সবজির পাশাপাশি আপনি আরও যেসকল খাবার গুলো খেতে পারেন সেগুলো হল
  • আপেল
  • আদা
  • পেঁয়াজ
  • রসুন
  • দারুচিনি
  • বাঁধাকপি
  • মাছ
  • লাল ক্যাপসিকাম
  • চেরি ফল
  • ডিমের সাদা অংশ
এই সকল খাবার যদি আপনি নিয়মিত গ্রহণ করেন তাহলে অবশ্যই আপনার কিডনি খুব পরিমাণে ভালো থাকবেন। আশা করি আপনারা সকল কিছু সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বুঝতে পেরেছেন।

কিডনি রোগীর খাবার তালিকা নিয়ে বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)

প্রশ্নঃ কিডনির প্রধান কাজ কি?
উত্তরঃ কিডনির প্রধান কাজ হলো শরীর থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল পদার্থ অপসারণ করা।

প্রশ্নঃ কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ কি কি?
উত্তরঃ কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণগুলো হলো
  • প্রসাবের সাথে রক্ত ঝরা
  • কম পরিমাণে খিদে পাওয়া
  • শরীরের ওজন হ্রস পাওয়া
  • নিজেকে ক্লান্ত অনুভব করা
  • নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া
  • বমি বমি ভাব হওয়া
  • মাথা ঘোরা
  • ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
প্রশ্নঃ কি খেলে কিডনি পরিষ্কার হবে?
উত্তরঃ যেসকল খবার খাওয়ার ফলে কিডনি পরিষ্কার হবে সেগুলো হলো
  • পানি
  • শসা
  • সাইট্রাস ফল
  • ক্র্যানবেরি
  • চর্বিযুক্ত মাছ
প্রশ্নঃ কত পয়েন্ট থাকলে কিডনি ভালো থাকে?
উত্তরঃ নারীদের জন্য স্বাভাবিক ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা ০.৫-১.১ মিলিগ্রাম। নারীদের জন্য স্বাভাবিক ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা ০.৬-১.২ মিলিগ্রাম। যেসকল ব্যাক্তিদের একটি কিডনি নেই তাদের ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা ১.৮ মিলিগ্রাম হলে কিডনি স্বাভাবিক রয়েছে।

প্রশ্নঃ কিডনি রোগীর জন্য কোন বাজরা ভালো?
উত্তরঃ কিডনি রোগীর জন্য Foxtail Millet (ফক্সটেল) বাজরা ভালো।

লেখকের মন্তব্য

কিডনি রোগীর খাবার তালিকা নিয়ে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের প্রধান আলোচনার বিষয় ছিলো। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করার মাধ্যমে তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিন। এমনই আরো তথ্যবহুল আর্টিকেল প্রতিদিন পড়ার আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।

Post a Comment

Previous Post Next Post