কাঁচা ছোলা খেলে কি মোটা হওয়া যায়প্রিয় পাঠক, আপনি কি ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? অথবা আপনি কি ভাতের মাড়ের উপকারিতা গুলো সম্পর্কে জানার জন্য আগ্রহী? তাহলে আপনি এখন একদম সঠিক জায়গাতেই রয়েছেন। কারণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক এবং ভাতের মাড়ের উপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই আপনি যদি এই সম্পর্কে জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক
আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আপনি ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম, ভাতের মাড়ের উপকারিতা, ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক, ভাতের মাড়ের ফেসপ্যাক, ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয় এবং ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

পেজ সূচিপত্রঃ

ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম

ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিকগুলো জানার পূর্বে আপনার অবশ্যই সঠিক ভাবে ভাতের মাড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে ধারণা রাখা উচিত। কেননা আপনি যদি সঠিক নিয়মে ভাতের মাড় খেয়ে থাকেন তাহলে আপনি এখান থেকে আরো অনেক বেশি উপকার গুলো উপভোগ করতে পারবেন। আর আপনি যদি অন্য এবং ভুল নিয়মে ভুলভাবে চেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে সেটা পরিবর্তন করে সঠিক নিয়মে খাওয়া উচিত। চলুন তাহলে এখন আমরা জেনে নেই কোন নিয়মে আপনি ভাতের মাড় খাবেন।

ভাতের মাড় খাওয়ার জন্য আপনি যখন ভাত রান্না করবেন তখন সেই ভাত যখন ফুটে আসবে প্রথম অবস্থায় যেই ভাতের মাড় উঠবে সেটি ফেলে দিবেন। এবং ভাতের মাড়ের শেষের দিকে যখন শেষ পর্যায়ে ভাতের মাড় উঠবে সেই সময় আপনি সেই ভাতের মাড় সংগ্রহ করবেন। ভাতের মাড় সংগ্রহ করে কিছুটা সময় রেখে দিবেন আলাদা পাত্রে। অবশ্যই এটি যখন হালকা গরম থাকবে তখন এটি খাবেন।

প্রথম অবস্থায় আপনি যখন ভাতের মাড় তুলবেন সেই ভাতের মাড় হবে পাতলা। আর যখন ভাতের মাড়ের শেষের দিকে আপনি ভাতের মাড় তুলবেন সেই ভাতের মাড় হবে ঘন এবং মোটা। সেটাই আপনাকে খেতে হবে। তার জন্য তুলে সংগ্রহ করে রেখে যখন এই ভাতের মাড়ের গরম কমে যাবে এবং সহনীয় মাত্রায় এসে যাবে সেই সময় এই ভাতের মাড় সাথে আপনি কিছুটা পরিমাণ লবণ মিশিয়ে নিয়ে খেতে পারেন।
এর পাশাপাশি যদি আপনার বাসায় ঘি থেকে থাকে তাহলে ভাতের মাড়ের সাথে কিছুটা পরিমাণ ঘি মিশিয়ে নিয়ে সেটি খেতে পারেন। তাহলে এর থেকে আপনি আরো অনেক বেশি উপকারিতা উপভোগ করবেন। আপনি যদি এই নিয়ম অনুযায়ী ভাতের মাড় খেয়ে থাকেন তাহলে আপনি এখান থেকে অনেক ভালো পরিমাণে উপকার পেয়ে থাকবেন। কোন কোন উপকার গুলো পাবেন সেগুলো সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করব।

ভাতের মাড়ের উপকারিতা

ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানার পূর্বে আসুন আমরা ভাতের মাড়ের উপকারিতাগুলো সম্পর্কে জেনে নেই। কেননা সকল জিনিসেরই অনেকগুলো উপকারিতা থাকার পাশাপাশি দেশ কিন্তু অপকারিতাও রয়েছে। তাই আপনি যদি সেই বিষয়ে অপকারগুলো জানতে চান তাহলে তার পূর্বে উপকারিতা সম্পর্কে জানাই আপনার উচিত হবে চলুন আমরা তাহলে এই পর্যায়ে ভাতের মাড়ের উপকারিতা গুলো জেনে নেই।
ভাতের মাড়ের উপকারিতা
শরীরে এনার্জি বৃদ্ধি করেঃ ভাতের মাড়ের সকল প্রকারের উপকারিতা গুলোর মধ্যে এটি হলো প্রথম এবং প্রধান উপকারিতা। সারাদিনের এনার্জি সংগ্রহ করার জন্য সকালে ভাত রান্না করার সময় আপনি সেই ভাতের মাড় খেতে পারেন। এতে করে আপনি সারাদিন কর্মক্ষম থাকবেন এবং শরীরের পর্যাপ্ত পরিমাণে এনার্জি পাবেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করেঃ যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য ভাতের মাড় হতে পারে অনেকটাই উপকারী। এর প্রধান কারণ হলো ভাতের মাড়ের ভেতর রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার। যেটি আমাদের শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি আমাদের শরীরের হজম শক্তি কেউ বৃদ্ধি করে থাকে। যার জন্য আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা নিরাময় হয়ে যায়।

ওজন বৃদ্ধিঃ যারা অনেকটাই রোগা রয়েছেন এবং মোটা হওয়ার জন্য অনেক ধরনের চিকিৎসা সেবা নেওয়ার পরেও আপনি কোন প্রকারের মোটা হতে পারছেন না তাদের জন্য এই ভাতের মাড় মোটা হওয়ার জন্য ঔষধ হিসেবে কাজ করতে পারে। ভাতের মাড় একজন ব্যক্তিকে মোটা হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে শক্তি যোগায়। যার কারণে আপনি ভাতের মাড় খাওয়ার জন্য মোটা হতে পারেন।
চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিঃ আপনারা যারা চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য আগ্রহী তাদের জন্য ভাতের মাড় হতে পারে অনেকটাই উপকারী। যদি প্রতিদিন গোসলের ৩০ মিনিট পূর্বে ভাতের মাড় চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে রাখেন তাহলে এটি আপনার চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে। তবে এর জন্য অবশ্যই আপনাকে প্রতি সপ্তাহে তিনদিন করে নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপঃ ভাতের মাড় আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে খুব সহজেই। যাদের ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য সেরা একটি খাবার হল এই ভাতের মাড়। ভাতের এই মাড় আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে সবথেকে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

উপরের উল্লেখিত এই সকল উপকারিতা গুলো ছিল ভাতের মাড়ের উপকারিতা। যেগুলো থেকে আশা করছি আপনারা ভাতের মাড়ের সকল উপকারিতা গুলো সম্পর্কে আপনি জানতে পেরেছেন। এর পরবর্তী পর্বে আমরা জানবো ভাতের মাড়ের সকল প্রকারের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে। তাই চলুন আর দেরি না করে পরবর্তী পর্বে যাওয়া যাক।

ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক

ভাতের মাড়ের উপকারিতাগুলো জানার পরেই আমাদের উচিত ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানা। কেননা আমরা যদি ভাতের মাড়ের শুধুমাত্র ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানি তাহলে আমরা এর উপকারিতা গুলো না জেনে ভাতের মাড় খাওয়া থেকে আমরা বিরত থাকবো। তাই অবশ্যই আপনাকে দুটি বিষয় সম্পর্কেই বিস্তারিত জ্ঞান রাখা উচিত। তাই বন্ধুগন চলুন এই পর্বে থেকে আমরা জেনে নেই ভাতের মাড় খাওয়ার সকল প্রকারের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে।
ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক
ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিকগুলো নিম্ন তুলে ধরা হলো।
  • অতিরিক্ত মোটা হওয়া
  • শরীরের চর্বি বৃদ্ধি পাওয়া
  • অতিরিক্ত পরিমাণে ঘুম হওয়া
  • ডায়রিয়ার সমস্যা হওয়া
  • কোলেস্টেরলের মাত্রার পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া
  • শরীরে পুষ্টির সমস্যা
নিম্নে এই সকল ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিকগুলো বিস্তারিত আকারে বর্ণনা করা হলো। তাই আপনি যদি এই সকল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

অতিরিক্ত মোটা হওয়াঃ ভাতের মাড়ে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার। যার কারণে আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিত এই ভাতের মাড় খান তাহলে অবশ্যই আপনি মোটা হতে শুরু করবেন। এর পাশাপাশি এই ফাইবার আপনার শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করবে। তবে এটি মোটেও খুব একটা বেশি অপকারী নয়।

শরীরের চর্বি বৃদ্ধি পাওয়াঃ ভাতের মাড়ের ভেতরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে এতে করে আমাদের শরীরে চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। যার কারণে আপনার মেদ ভুঁড়ির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। এবং আপনি অনেকটাই মোটামুটি শুরু করবেন।

অতিরিক্ত পরিমাণে ঘুম হওয়াঃ আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিত ভাতের মাড় খেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার অনেক বেশি পরিমাণে ঘুম হবে। যারা কর্মঠ ব্যক্তি রয়েছেন তাদের জন্য এটা আসলেই অনেক বড় ক্ষতিকর একটি দিক।

ডায়রিয়ার সমস্যা হওয়াঃ যদি আপনি প্রতিদিন নিয়মিত পরিমিত পরিমাণের থেকে বেশি পরিমাণে ভাতের মাড় খেয়ে থাকেন তাহলে এটি আপনার ডায়রিয়ার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কেননা ভাতের মাড়ের ভেতরে অনেক বেশি পরিমাণেই ফাইবার রয়েছে। এটি যদি আপনার শরীরে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে পৌঁছে যায় তাহলে এটি আপনার ডায়রিয়ার সমস্যা সৃষ্টি করতে সক্ষম। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে খান। মাত্রাতিরিক্ত খাওয়ার কোনাই প্রয়োজন নেই।
কোলেস্টেরলের মাত্রার পরিমাণ বৃদ্ধিঃ যদি প্রতিদিন অত্যাধিক পরিমাণে ভাতের মাড় খাওয়া হয় তাহলে এটি আমাদের শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করতে সক্ষম। তাই সপ্তাহে তিন দিন অথবা দুইদিন পর্যন্ত খাওয়া উচিত। এর বেশি কখনোই খাওয়া উচিত নয়।

শরীরে পুষ্টির সমস্যাঃ ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে যেহেতু অন্যান্য সকল খাবারগুলো খাওয়ার চাহিদা কম থাকে তাই অন্যান্য সকল ফলের এবং খাবারের পুষ্টির শরীরের না প্রবেশ করার কারণে আমাদের শরীরে পুষ্টির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই ভাতের মাড় খাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য সকল ধরনের পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার ও খাওয়া উচিত।

ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয়

ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিকগুলোর মধ্যে আমরা জানতে পেরেছি ভাতের মাড় যদি প্রতিদিন নিয়মিত খাওয়া হয় তাহলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আজকের এই পর্বে এখন আমরা জানবো ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয় কিনা। আর যদি মোটা হয়ে থাকে তাহলে কোন কারণে এবং ভাতের মাড়ের ভেতরে এমন কোন উপাদান রয়েছে যার কারণে মোটা হতে শুরু করে। তাই চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

আপনাদের মধ্যে যারা অনেক চিকন রয়েছেন তারা অনেক সময় প্রশ্ন করে থাকেন আমি যদি ভাতের মাড় খাই তাহলে কি আমি মোটা হব। তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি অনেকটাই হেল্পফুল হবে। ভাতের মাড়ের ভেতরে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরকার রয়েছে। যেটি আমাদের শরীরে অনেক বেশি পরিমাণে ক্যালোরির যোগান দেয়। তাই এটি যদি আপনি অতিরিক্ত গ্রহণ করেন তাহলে এটি আপনার শরীরের চর্বি জমতে সহায়তা করবে।

যার ফলশ্রুতিতে আপনি মোটা হতে শুরু করবেন। প্রতি ১০০ গ্রাম ভাতের মাড়ের ভেতরে প্রায় ৯০ গ্রাম পর্যন্ত কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। যেটি আমাদের শরীরের শক্তির প্রধান একটি উৎস। তবে আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে প্রতিদিন কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করেন তাহলে এটি আপনার শরীরের চর্বি হিসেবে জমা হয়ে আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। আশা করছি আপনি এতক্ষণে ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয় কিনা সেই সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন।

ভাতের মাড়ের ফেসপ্যাক

আমরা সকলেই এখন মোটামুটি ভাবে ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানি। তবে আপনি জানলে অবাক হবেন যে এই ভাতের মাড় দিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়েও আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। ভাতের মাড়ের ফেসপ্যাক আপনার ত্বকের জন্য অনেকটাই উপকারী। তাই এটি কিভাবে তৈরি করে ব্যবহার করবেন সেই সম্পর্কে জানার জন্য এই পর্বটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভাতের মাড়ের ফেসপ্যাক
আমরা সকলেই প্রতিদিন ভাত রান্না করি। আর এই ভাত রান্না করার সময় ভাতের মাড় আমরা অনেকেই ফেলে দিয়ে থাকি। তাই আপনি যখন ভাত রান্না করবেন সেই সময়ে ভাতের মাড় খেলে না দিয়ে এটি ব্যবহার করে একটি অসাধারণ ফেসপ্যাক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। যেটি আপনার ত্বকের জন্য অনেকটাই ভালো কাজ করবে। আমরা সকলেই কম বেশি বাড়ির বাইরে চলাফেরা করি।
আর এই বাড়ির বাহিরে চলাফেরা করার সময় সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির কারণে আমাদের ত্বকের ওপরে দাগ পড়ে যায়। যার ফলে আমাদের ত্বকের বিভিন্ন ধরনের কালো দাগের সৃষ্টি হয়। এই দাগকে আমরা অনেকেই বলে থাকি বয়সের ছাপ আবার অনেকে বলে থাকে এটিকে বলি রেখা। তবে আমরা যে যেটাই বলি না কেন এটা আমাদের ত্বকের উপরে দেখতে অনেকটাই বেমানান লাগে। যদি আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে ফেলে।

আপনার যদি এমন সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে এই সমস্যা সমাধান করার জন্য আপনার এই ভাতের মাড়ের ফেসপ্যাক অনেকটাই কার্যকর হয়ে উঠতে পারে। এটি হলো একটি প্রাকৃতিক এবং কার্যকর ফেসিয়াল উপাদান। যেটি আপনি খুব সহজে বাড়িতে বসে থেকে করে নিতে পারবেন। এটি তৈরি করার জন্য প্রথমে আপনাকে ভাতের মা সংগ্রহ করে নিতে হবে। এর পরে তাতে কিছু পরিমাণ কাঁচা হলুদ এবং ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিতে হবে।

এই তিনটি উপাদান একসাথে করে নিয়ে সুন্দরভাবে মিশিয়ে নিয়ে এটি আপনার ত্বকের উপরে লাগান। ত্বকের ওপরে লাগিয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ পর্যন্ত আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। যখন একটু দেখবেন হালকা করে শুকিয়ে গেছে তখন এটি পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। তাহলে এটি আপনার ত্বকের সকল ধরনের সমস্যা এমনকি মুখের দাগের সমস্যাও খুব দ্রুত দূর করে দেবে। এছাড়াও এটি আপনার ত্বককে খুব দ্রুতই উজ্জ্বল করে তুলবে।

ভাতের মাড় চুলে দিলে কি হয়

ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিকগুলো জানার পরে আপনি হয়তো ভাবছেন এই ভাতের মাড় আমরা কেন ব্যবহার করব। এটিকে ফেলে দিলেই তো হয়। তবে এটিকে যদি আপনি ফেলে দিতে চান তার থেকে ভালো হবে যদি এটি আপনি আপনার মাথায় চুলের জন্য ব্যবহার করেন। এর জন্য অবশ্যই আপনাকে ভাতের মাড়ের একটি প্যাক বানিয়ে সেটি মাথায় ব্যবহার করতে হবে। কিভাবে ভাতের মাড়ের রের প্যাক বানিয়ে মাথায় ব্যবহার করবেন সেই সম্পর্ক নিয়ে থাকছে এখানে বিস্তারিত আলোচনা।

আপনি যদি ভাতের মাড়ের প্যাক বানিয়ে সপ্তাহে নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে এটি হবে আপনার চুলের জন্য অনেকটাই কার্য করি। তার মধ্যে রয়েছে এটি আপনার চুলকে গড়ে তুলবে অনেকটি লম্বা এবং ঘন। তবে এই ভাতের মাড় দিয়ে প্যাক তৈরি করার জন্য আপনাকে কিছু উপকরণ ব্যবহার করতে হবে। সেগুলো হলো
  • ২-৩ চা চামচ পরিমাণ ভাতের মাড়
  • মধু এক চামচ
  • নারিকেলের তেল
  • লেবুর রস ১/২ চামচ
  • কফির গুড়া
  • কিছুটা পরিমাণ অ্যালোভেরার জেল
গুঁড়া এই সকল উপাদানগুলো একসাথে করে নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এই উপাদানটি চুলের প্রতিটি গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়ে দিতে হবে। যখন এটি আপনি চুলে লাগাবেন তখন থেকে প্রায় 30 মিনিট অথবা এক ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। তারপরে দেখবেন এটি শুকিয়ে এসেছে। এরপরে আপনি প্রতিদিনে নিয়মিত ব্যবহার করা শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন।

যদি আপনি এমন ভাবে প্যাক বানিয়ে নিয়েন প্রতি সাপ্তাহে ৩ দিন নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে এটি আপনার চুলকে করে ধরবে মজবুত, উজ্জ্বল এবং সাইনিং। এছাড়াও এটি আপনার মাথায় নতুন করে চুল গজানোর জন্য সাহায্য করবে। আশা করছি আপনাকে সম্পূর্ণ বিষয় বিস্তারিত বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।

ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্নঃ ভাতের মাড় খাওয়া কি ক্ষতিকর?
উত্তরঃ ভাতের মাড় খাওয়া ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষতিকর হবে না যতক্ষণ না আপনি এটি অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করছেন। তাই আপনি যখন ভাতের মাড় খাবেন তখন অবশ্যই এটি আপনার জন্য যেনো ক্ষতির কারণ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।

প্রশ্নঃ ভাতের ফ্যান চুলে দিলে কি হয়?
উত্তরঃ যদি আপনি ভাতের মাড় চুলে দেন তাহলে এটি আপনার চুলকে উজ্জ্বল করবে এবং চুল ঝরা প্রতিরোধ করবে। এছাড়াও এটি মাথায় নতুন করে চুল গজানোর জন্য সাহায্য করবে।

প্রশ্নঃ ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হওয়া যায়?
উত্তরঃ হ্যা, আপনি যদি নিয়মিত প্রতিদিন ভাতের মাড় খান তাহলে এটি আপনাকে খুব দ্রুতই মোটা হওয়ার জন্য সাহায্য করবে। তাই যারা অনেকটাই রোগা রয়েছেন এবং মোটা হতে চাচ্ছেন তারা এটি নিয়মিত খেতে পারেন। আশা করছি এটি আপনার জন্য অনেকটাই উপকার হবে।

প্রশ্নঃ খালি পেটে ভাতের মাড় খেলে কি হয়?
উত্তরঃ খালি পেটে ভাতের মাড় খেলে এটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরণের উপকার করে থাকে। তার মধ্যে রয়েছে
  • তাত্ক্ষণিকভাবে শরীরে শক্তি যোগায়
  • ডায়রিয়াকে প্রতিরোধ করে
  • ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করে
  • কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করে
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
প্রশ্নঃ ভাতের মাড় মুখে লাগালে কি হয়?
উত্তরঃ ভাতের মাড় যদি আপনি নিয়মিত মুখে লাগান তাহলে এটি আপনার মুখের ওপর জমে থাকা ময়লাকে খুব দ্রুতই দূর করে দেয়। এছাড়াও আমাদের মুখের ছোট ছোট ছিদ্রকে খুব সহজে পূরণ করে দেয়। এর পাশাপাশি এটি আমাদের ত্বকের উপরে অংশের জমে থাকা মৃত কোষকে খুব সহজেই অপসারণ করে ফেলে। যার কারণে আমাদের মুখের ত্বক হয়ে ওঠে অনেক সুন্দর এবং উজ্জ্বল।

শেষ কথা

ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক এবং ভাতের মাড়ের উপকারিতাগুলো নিয়ে আজকের আমাদের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। যদি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করার মাধ্যমে জানাবেন। এছাড়াও আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। প্রতিদিন এমন আরো তথ্যবহুল আর্টিকেল পড়ার জন্য আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।

Post a Comment

Previous Post Next Post