বঙ্গবন্ধু টানেল রচনাপ্রিয় পাঠক, আপনি কি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কে
জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি এখন সঠিক জায়গাতেই রয়েছেন। কারণ আজকের আমাদের এই
আর্টিকেলের মধ্যে আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কে
আলোচনা করবো। এছাড়াও আরো অনেক বিষয় সম্পর্কে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। তাই জানার
জন্য শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলের মধ্যে আপনি জানতে পারবেন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ
কেন্দ্র কত মেগাওয়াট, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে অর্থায়ন করেছে
কোন দেশ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোন নদীর তীরে অবস্থিত এবং রূপপুর
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অনুচ্ছেদ সম্পর্কে।
পেজ সূচিপত্রঃ
ভূমিকা
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের আরো একটি মেগা প্রকল্পের নাম হল রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্র। তাই এই সম্পর্কে আমাদের সকলেরই কিছু তথ্য জেনে রাখা উচিত। কেননা
এই সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন আমাদের সাধারণ জ্ঞানের পরীক্ষাতে আসে। তাই
আপনি যদি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত কোন তথ্য
জেনে না থাকেন তাহলে আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।
বাংলাদেশের এই মেগা প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার ফলে
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভাবমূর্তি আরো অনেকটা দূরে এগিয়ে যাবে। এই বিদ্যুৎ
কেন্দ্রটি ২.৪ গিগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন। যেটি আমাদের বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের
ঈশ্বরদী উপজেলার এবং পাবনা জেলায় রূপপুর নামক স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে।
মানুষের জীবন যাত্রার মানকে উন্নত করার জন্য এবং তার পাশাপাশি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ
বিভ্রাটের সমস্যার সমাধান করার জন্য বাংলাদেশের এই কালজয়ী স্থাপনা আরো অনেকটা
বাংলাদেশের মানুষকে আধুনিকতার ছোঁয়া এনে দেবে। যা বাংলাদেশের সকল শিল্প
কারখানাতে এবং ব্যক্তিজীবনকে আরো অনেক সহজ করে তুলবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাধারণ জ্ঞান
আজকের আমাদের এই আর্টিকেলের প্রধান আলোচনার বিষয়টি হলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ
কেন্দ্র সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কে। কেননা বাংলাদেশের একটি অন্যতম মেগা প্রকল্প
হিসেবে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কিছু খুঁটিনাটি সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কে আমাদের জানা
উচিত। তার প্রধান কারণ হলো এই প্রকল্পটি সম্পর্কে বিভিন্ন পরীক্ষাতে সাধারণ
জ্ঞানের প্রশ্ন করা হয়। যদি আপনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে
সাধারণ জ্ঞান জেনে থাকেন তাহলে এই প্রশ্নগুলো আপনার জন্য আরো অনেক সহজ হয়ে যাবে।
বাংলাদেশের সরকার কতৃক গৃহীত
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর টানেল
এর পরেই রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আরো একটি মেগা প্রকল্প। যেটি
বাংলাদেশের শিল্পকে আরো অনেক বৈপ্লবের পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এই বিদ্যুৎ
কেন্দ্রটির সাথে যোগাযোগ হিসেবে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং পায়রা তাপ বিদ্যুৎ
কেন্দ্র প্রকল্প আরব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। তাহলে চলুন এখন
কিছু সাধারণ জ্ঞান জেনে নেওয়া যাক।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোথায় অবস্থিত?
উত্তরঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাংলাদেশের পাবনা জেলার ঈশ্বরদী
থানার পদ্মা নদী তিরবর্তিতে রূপপুর নামক স্থানে অবস্থিত।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যয় কত?
উত্তরঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যয় হলো ১ হাজার ৩৫০ কোটি
মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ১ লক্ষ ১৪ হাজার কোটি টাকা।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কবে নির্মাণ কাজ শুরু করা
হয়েছিলো?
উত্তরঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ৩০ নভেম্বর ২০১৭ সালে নির্মাণ
কাজ শুরু করা হয়েছিলো।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিচালক কে?
উত্তরঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিচালক হলো নিউক্লিয়ার
পাওয়ার প্লান্ট বাংলাদেশ লিমিটেড।
প্রশ্নঃ কার সাথে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ সম্পর্কে চুক্তি
করা হয়।
উত্তরঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ সম্পর্কে রাশিয়ান
ফেডারেশনের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত করা হয়।
প্রশ্নঃ রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি হিসেবে কি ব্যবহৃত
হবে?
উত্তরঃ রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়াম
ব্যবহৃত হবে।
প্রশ্নঃ ১ কেজি ইউরেনিয়াম সমান কত টন কয়লা?
উত্তরঃ ১ কেজি ইউরেনিয়াম সমান ৪ হাজার ৫০০ টন কয়লা?
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
উত্তরঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কত মেগাওয়াট সম্পন্ন?
উত্তরঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২,৪০০ মেগাওয়াট সম্পন্ন।
প্রশ্নঃ বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান কত?
উত্তরঃ বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৮ তম।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম কি?
উত্তরঃ বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম হলো রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রাশিয়া কত বছর বাংলাদেশকে
বিনামূল্যে জ্বালানি সরবরাহ করবে?
উত্তরঃ প্রথম ৩ (তিন) বছর রাশিয়া বিনামূল্যে জ্বালানি সরবরাহ করবে।
আরো পড়ুনঃ রাজশাহী বিভাগের জেলা সমূহ ও উপজেলা
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্পের মেয়াদকাল কত?
উত্তরঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্পের মেয়াদকাল হলো জুলাই
২০১৬ থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
প্রশ্নঃ কোন দেশে সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে?
উত্তরঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
আছে।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশ কোন দেশের সাথে
চুক্তি সাক্ষর করে?
উত্তরঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশ রাশিয়া দেশের
সাথে চুক্তি সাক্ষর করে?
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কোন মন্ত্রণালয়ের অধীনে?
উত্তরঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
মন্ত্রণালয়ের অধিন।
প্রশ্নঃ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে বাংলাদেশ কত তম?
উত্তরঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ
বিশ্বের ৩৩ তম পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী দেশ হিসেবে বিশ্বে আত্মপ্রকাশ করবে
বাংলাদেশ।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সম্ভাব্য উৎপাদন কত?
উত্তরঃ বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২টি ইউনিটে
সম্ভাব্য উৎপাদন ক্ষমতা ২,৪০০ মেগাটন।
প্রশ্নঃ পায়রা বিদ্যুৎ কোথায়?
উত্তরঃ বাংলাদেশ-এর পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার পায়রায় নির্মিত
বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি হলো পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
প্রশ্নঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেয়াদ কত বছর?
উত্তরঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র যখন থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে
সেই সময় থেকে এর স্থায়িত্বকাল হবে ১০০ বছর পর্যন্ত।
প্রশ্নঃ রুপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়টি চুল্লি আছে?
উত্তরঃ রুপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২টি VVER-1200 চুল্লি আছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কত মেগাওয়াট
আমরা সকলেই ইতিপূর্বে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কে
জানতে পারলাম। এখন এই পাঠের মধ্যে আমরা জানবো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
কত মেগাওয়াট সেই সম্পর্কে। আপনি হতো অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন অনেক জায়গাতে।
কিন্তু রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র কত মেগাওয়াট সেই সম্পর্কে হয়তো সঠিক
তথ্য কোথাও খুঁজে পাননি। চলুন তাহলে এই পাঠের মধ্যে থেকে সঠি তথ্য জেনে নেওয়া
যাক।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ২,৪০০ মেগাওয়াট সম্পন্ন বিদ্যৎ উৎপাদন করতে
পারবে। যেটি বাংলাদেশের বিদ্যুতের সমস্যাকে অনেকটাই হ্রাস করে নিয়ে আসবে। তার
ফলে বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। এছাড়াও বাংলাদেশের শিল্প
কারখানার কাজও অনেক দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপরে
প্রভাব ফেলবে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে আরো অনেক বেশি সমৃদ্ধশালী হবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে অর্থায়ন করেছে কোন দেশ
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাধারণ জ্ঞান এর মধ্যে আপনারা রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে অর্থায়ন করেছে কোন দেশ সেই সম্পর্কে জেনেই গিয়েছেন।
তারপরেও আমরা এই পাঠের মধ্যে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। যাতে করে আপনাকে আর কষ্ট
করে এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে না হয়। চলুন তাহলে জেনে নেই।
আরো পড়ুনঃ অধ্যবসায় রচনা
বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ৯০ শতাংশ অর্থায়ন করেছে
রাশিয়া। বাংলাদেশের এই প্রকল্পের বাজেট ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩৫০ কোটি মার্কিন ডলার,
যা বাংলাদেশি টাকায় ১ লক্ষ ১৪ হাজার কোটি টাকা। যার ৯০ শতাংশ অর্থায়ন করছে
রাশিয়া। আশা করছি আপনাকে এই সম্পর্কে তথ্য জানাতে সক্ষম হয়েছি।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইতিহাস
আপনারা অনেকেই হয়তো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইতিহাস সম্পর্কে অবগত নন।
আবার এমন অনেকেও আছেন যারা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাধারণ জ্ঞান
সম্পর্কেও জানেন না। যারা এই সম্পর্কে জানেন না তারা উপর থেকে মনোযোগ সহকারে
পড়বেন। তাহলেই জানতে পারবেন। এই পাঠের মধ্যে আমরা জানবো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ
কেন্দ্র ইতিহাস সম্পর্কে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
বাংলাদেশের একটি অন্যতম মেগা প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
বাংলাদেশের পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পদ্মা নদীর তীরে রূপপুর নামক স্থানে গড়ে
উঠেছে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এই প্রকল্প সম্পর্কে অনেকগুলো যথাযথ
প্রশ্ন যাচাই করা হয়। বাংলাদেশের এই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করার
জন্য এই প্রকল্পটির জন্য ২৬০ একর জমি এবং আবাসিক এলাকার জন্য ৩২ একর জমির
নির্বাচন করা হয়।
এই সংশ্লিষ্ট এলাকাটির উপরেই এই প্রকল্পটির নির্মাণ করা হবে। পারমাণবিক বিদ্যুৎ
কেন্দ্র নির্মাণ করার জন্য বাংলাদেশ সবার প্রথমে উদ্যোগ গ্রহণ করে 1961 সালে।
1962 থেকে 1968 সালে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার পদ্মা নদীর তীরবর্তী স্থানের
রূপপুর নামক এলাকাতে এই প্রকল্পটির জন্য যাচাই করা হয়। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭০ সালে
বাংলাদেশের এই মেগা প্রকল্প ২০০ মেগাওয়াটের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত সেই সময়ে পাকিস্তান সরকার বাতিল বলে ঘোষণা করে।
বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫
সালে আবার ২০০ মেগাওয়াটের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করার উদ্যোগ
গ্রহণ করেন। এর পরবর্তী সময়ে ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৬ সালে মেসার্স সোফরাটম কর্তৃক
পরিচালিত ফিজিবিলিটি তারা এই প্রকল্পটির স্বপক্ষে যোগ্যতা দেখায়। এই প্রকল্পটির
যৌক্তিকতা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন বাধ্যবাধকতার কারণে সেই সময়ে বাস্তবায়ন করা
সম্ভব হয়নি।
কিন্তু বর্তমান সময়ে এই প্রকল্পটির কাজ হাতে নিয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৮৬ সালের মধ্যে যখনই প্রকল্পটি সম্পর্কে
বাধ্যবাধকতা দেখা দেয় তারপরও ভর্তি সময়ে ১৯৮৭ থেকে ১৯৮৮ সালে জার্মান এবং
সুইজারল্যান্ড এই দুটি দেশের দুটি কোম্পানি কর্তৃক বিভিন্ন স্টাডির মাধ্যমে তারা
জানায় যে এই প্রকল্পটি অনেকটাই যৌক্তিক।
আরো পড়ুনঃ মোবাইলে চাকরির আবেদন করার সহজ নিয়ম
তাই তারা সেই সময়ে এই স্টাডিজের মাধ্যমে 300 থেকে 500 মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ
প্রকল্প নির্মাণ করার জন্য সুপারিশ করেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল, বাংলাদেশের পরমাণু
শক্তি কমিশনার ডাক্তার এম এ ওয়াজেদ মিয়া ৬০০ মেগাওয়াটের একটি রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এই সময়তে এর পাশাপাশি
মানব সম্পদ উন্নয়ন করার জন্য এছাড়াও আরো অনেক বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম
গ্রহণ করেন।
যার ফলশ্রুতিতে ২০০৮ সালে এই নির্মাণ প্রকল্পটির কাজ করার জন্য অঙ্গীকার প্রদান
করা হয়। ২০১৬ সালের ১৪ই মে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করার জন্য
প্রয়োজনীয় সকল ধরনের অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে আইনি সুপারিশ বাস্তবায়ন
করা হয়। এর ফলে 2017 সালের 25 মার্চ বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার ফেডারেশন এর মাধ্যমে
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রমের অগ্রগতি বৃদ্ধি পায়।
এই কাজ করার জন্য বাংলাদেশের রাশিয়ার সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। ২০১৭ সালের ৪ই
নভেম্বর একটি অনুষ্ঠান করার মাধ্যম দিয়ে বাংলাদেশের একটি পরমাণু বৃহৎ বিদ্যুৎ
প্রকল্পের কার্যক্রমের ডিজাইনিং এবং কনস্ট্রাকশন লাইসেন্স প্রদান করা হয়। 2017
সালের 30 নভেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের কংক্রিট
ঢালাইয়ের কাজ বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন।
এই আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণের
দিকে আরও এক ধাপ্পা এগিয়ে দিয়েছে। যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ৩৩ তম পারমাণবিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্বীকৃতি পেয়েছে। এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন করার
মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ১১৮ তম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
শেষ কথা
আজকের আমাদের এই আর্টিকেলের সম্পূর্ণ আলোচনার মূল বিষয় ছিল রূপপুর পারমাণবিক
বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কে। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি
মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে এই বিষয়ে জানতে পেরেছেন। যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে
থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। তাতে করে তারাও
অনেক তথ্য জানতে পারবে। এমনই আরো তথ্যবহুল আর্টিকেল প্রতিদিন পড়ার জন্য আমাদের
সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।
Post a Comment