ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতাপ্রিয় পাঠক, পানি পান করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আপনি জানেন কি? যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। কারণ আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমরা পানি পান করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই জানার জন্য শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পানি পান করার সঠিক নিয়ম
আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে পানি পান করার দোয়া পানি পান করার ৬ টি সুন্নতসমূহ দৈনিক পানি পান করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন পানি পান করার ৬ টি সুন্নত সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ

পানি পান করার সঠিক নিয়ম

পানি পান করার সঠিক নিয়ম এই টাইটেলটি দেখে আপনারা হয়তো মনে করে থাকবেন পানি পান করার আবার কোন সঠিক নিয়ম আছে নাকি। হ্যাঁ অবশ্যই পানি পান করার সঠিক নিয়ম রয়েছে। এই সকল সঠিক নিয়ম অনুযায়ী পানি পান না বললে আপনি ভুগতে পারেন পানি শূন্যতায়। চলুন তাহলে এখন জেনে নেওয়া যাক পানি পান করার সঠিক নিয়মসমূহ।
  • সকালে ঘুম থেকে উঠেই পানি পান করুন। কারন সারারাত ঘুমানোর পরে আপনার শরীর পানি শুন্য হয়ে যেতে পারে। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে এক গ্লাস পানি পান করুন। সকালে পানি পান করার অনেক সুফল রয়েছে।
  • অতিরিক্ত ঘামার পরে পানি পান করুন। কারণ আপনি যখন অতিরিক্ত ঘামেন, তখন আপনার শরীর থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়। শুধু পানি নয় পানির সাথে লবনও বের হয়ে যায়। তুমি যতটুকু ঘামবেন অনুমান অনুযায়ী তার থেকে অধিক পানি পান করুন।
  • মেয়েরা মাসিকের অস্বস্তিবোধ কাটাতে অবশ্যই পিরিয়ডের আগে প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন। তাহলে পেটের ফোলাভাব, ক্র্যাম্প বা মাথাব্যথার লক্ষণে কষ্ট পাবেন না।
  • ডিসমেনোরিয়ায় আক্রান্ত সাম্প্রতিক অল্পবয়সী নারীদের উপর করা এক সমীক্ষা বলছে, অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঋতুস্রাবে ভোগেন এমন নারীরা বেশি পানি পান করলে পেলভিক ব্যথা থেকে নিস্থার পাবেন।

পানি পান করার ৬ টি সুন্নত

পানি পান করার সঠিক নিয়ম জানার পরে আমাদেরকে অবশ্যই পানি পান করার ৬ টি সুন্নত যম্পর্কে জানা উচিত। পানি পান করা কাজ টি ছোট হলেও আমাদের দিনে প্রায় অনেক বার এই কাজটি করতে হয়। পানি পানের জন্য ইসলাম আমাদের নির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। যেইটা আমাদের নবি করিম (সা.) আমাদের শিক্ষা দিয়ে গেছেন। চলুন তাহলে এখন পানি পান করার ৬ টি সুন্নত সম্পর্কে জেনে নেওয়া জাক।
  1. পানি পানের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা
  2. সবসময় বসে থেকে পানি পান করা
  3. সবসময় দান হাতে পানি পান করা
  4. পানি পান করার শুরুতে পরিষ্কার পানি দেখে পান করা
  5. এক নিঃশ্বাসে পানি পান না করে দুই বা তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করা
  6. এবং পানি পান করা শেষে আলহামদুলিল্লাহ্‌ বলা

পানি পানে যে ৬টি আমল করতেন বিশ্বনবি

পানি পান করার সঠিক নিয়ম জেনে আমাদেরকে অবশ্যই পানি পানে যে ৬টি আমল করতেন বিশ্বনবি সেই সম্পর্কে অবশ্যই জানা উচিত। কারণ আমরা মুসলিম। আর মুসলিম হিসেবে এই সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই সঠিক জ্ঞান রাখা উচিত। তাই চলুন আমরা এই সম্পর্কে এখন বিস্তারিত তথ্য জেনে নেই।
  • পানি পান করার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা
  • রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা পানি পান করতে যাবে তখন প্রথমেই ‘বিসমিল্লাহ’ পড়বে।’ (তিরমিজি)
  • আপনাদের সকলের জেনে রাখা উচিত যে, শুধু পানি পান করার সময়ই নয়, বরং যে কোনো ভালো কিছু খাওয়ার সময় এবং যে কোনো ভালো কাজের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা উচিত।
  • সবসময় ডান হাতে পানি পান করা
  • রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন কখনো খাবার এবং পানীয় বাম হাতে গ্রহণ করবে না। কেননা শয়তান বাম হাতে খাবার গ্রহণ করে। (মুসলিম)
  • নিঃশ্বাসে পানি পান করা
  • রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কখনো এক নিঃশ্বাসে পানি পান করবেনা । বরং তোমরা দুই কিংবা তিন নিঃশ্বাসে পানি পান শেষ করবে।( সহিহ বুখারি)
  • সবসময় বসে পানি পান করা
  • রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, (আগে) বসুন এবং পানি করুন। (মুসলিম)
  • গ্লাসের পানিতে নিঃশ্বাস না ছাড়া
  • পানি পান কিংবা খাবার গ্রহণের সময় মুখ থেকে পানি কিংবা খাবারে নিঃশ্বাস না ছাড়া।(তিবরানি)
  • পানি পান শেষ করার পর সবসময় ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পড়া
পানি পান শেষ করার পর আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় স্বরূপ সকলের ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পড়া উচিত। এছাড়াও সকল ভালো কাজের শেষে সবসময় আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করা উচিত। যেইটা আমাদের নবি করিম (সা.) শিক্ষা দিয়ে গেছেন।

সকালে পানি খাওয়ার নিয়ম

সকালে ঘুম থেকে উঠে খুব বেশি পরিমাণে নয় অন্তত এক গ্লাস পানি খাওয়া উচিত। কারণ রাত্রে যখন আমরা ঘুমাই তখন আমাদের হজম প্রক্রিয়ার কেমন কোন কাজ থাকে না। তাই হজম প্রক্রিয়াকে কাজে সহায়তা করার জন্য সকালে এক গ্লাস পানি খাওয়া উচিত।
সকালে পানি খাওয়ার নিয়ম
অনেকে আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে ঢক ঢক করে ৩/৪ ক্লাস পানি খেয়ে নেই। যেটা মোটেও উচিত নয়। এর পরিণাম ভালো হওয়ার থেকে খারাপই বেশি হবে।

দৈনিক পানি পান করার নিয়ম

পানি পান করার সঠিক নিয়ম জেনে আমাদেরকে অবশ্যই দৈনিক পানি পান করার নিয়ম সম্পর্কে জানা উচিত। আমাদের শরীরের প্রায় ৬০F শতাংশ পানি দিয়ে তৈরি। আমাদের শরীরে প্রতিদিন যে পরিমাণ পানির ঘাটতি হয় তা সাধারণত আমরা যে ফলমূল খাই, সেই ফলমূল খাওয়ার মাধ্যমে পানির ঘাটতি টা পূরণ হয়। এছাড়াও আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া উচিত।

বেশি পরিমাণে পানি খেলে আমাদের শরীরের কোষগুলো সতেজ থাকে। এবং আমাদের শরীর সুস্থ থাকে। আমাদের প্রতিদিন প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লিটার পানি পান করা উচিত। কারণে বাণী আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। তাই হয়তো বলা হয় পানির অপর নাম জীবন।

পানি পান করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্নঃ প্রতিদিন কত গ্লাস পানি পান করা উচিত?
উত্তরঃ একজন পূর্ণ বয়ষ্ক মানুষের প্রতিদিন অন্তত দুই লিটার পরিমাণ পানি পান করা উচিত।

প্রশ্নঃ খাবার খাওয়ার কত মিনিট পর পানি খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বে এবং খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে পানি পান করা উচিত।

প্রশ্নঃ ব্যায়াম করার কতক্ষণ পর পানি খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ ব্যায়াম করার অন্তত পক্ষে ৩০ মিনিট পরে ৩৫০ মিলিগ্রাম পানি পান করা উচিত।

প্রশ্নঃ সকালে কতটুকু পানি পান করা উচিত?
উত্তরঃ সকালে ঘুম থেকে উঠে শরীরের প্রতি কেজি ওজনের জন্য ৩৫ মিলিগ্রাম করে পানি পান করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞরা দিয়ে থাকেন।

প্রশ্নঃ কত সময় পর পর পানি খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ কত সময় পর পর পানি খাওয়া উচিত এই সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে আপনি যখন খাবার খাবেন তার ৩০ মিনিট পূর্বে এবং খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে পানি পান করা উচিত।

প্রশ্নঃ ওজন অনুযায়ী প্রতিদিন কত লিটার পানি খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ আপনার মোট ওজনকে ৩০ দিয়ে ভাগ করুন তাহলে পেয়ে যাবেন আপনাকে প্রতিদিন কতটুকু পরিমাণ পানি পান করা উচিত হবে। 

প্রশ্নঃ একজন মানুষের দিনে কত লিটার পান করা উচিত?
উত্তরঃ একজন মানুষের জন্য দিনে দিনে প্রায় ১৫.৫ কাপ (৩.৭ লিটার) তরল এবং মহিলাদের জন্য দিনে প্রায় ১১.৫ কাপ (২.৭ লিটার) তরল পানি পান করা উচিত।

লেখকের মন্তব্য

আজকেরে আর্টিকেলটিতে পানি পান করার ছয়টি সুন্নত পানি পান করার দোয়া পানি পান করার সঠিক নিয়ম এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশাকরি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি করে এই বিষয়ে একটি ক্লিয়ার ধারণা পেয়েছেন। যদি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধু হিসেবে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

Post a Comment

Previous Post Next Post