সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণপ্রিয় পাঠক, জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত জানতে পারবো। আপনি যদি এই জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার এর বিষয়ে জানার জন্য আগ্রহি হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
আজকের এই আর্টিকেলটি আপনি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়লে জলাতঙ্ক রোগ কাকে বলে জলাতঙ্ক কিভাবে ছড়ায় জলাতঙ্ক রোগের পরীক্ষা জলাতঙ্ক রোগের প্রতিরোধ এ বিষয়ে সম্পূর্ণ একটি ধারণা পাবেন। যেটা আপনাকে বাস্তব জীবনে সহায়তা করবে।

পেজ সূচিপত্রঃ জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

জলাতঙ্ক রোগ কাকে বলে

আমরা সকলেই জানি জলাতঙ্ক নামক রোগটি কুকুর বা বিড়ালের কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। কুকুর বা বিড়ালের লালার সংস্পর্শে এলে সাধারণত জলাতঙ্ক রোগটি হয়। আমরা সকলে এমনটা জানলেও আমরা জানি না যে জলাতঙ্ক রোগ কাকে বলে।

জলাতঙ্ক হলো একটি ভাইরাস জনিত রোগ। সেই ভাইরাসটির নাম হলো রেবিজ ভাইরাস। এটি সাধারণত রেবিজ ভাইরাস নামক এক ধরনের নিউরোট্রপিক ভাইরাস দিয়ে তৈরি হয়। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি পানি দেখে ভয় পায়। জলাতঙ্ক মানে জল দেখলেই সেই ব্যক্তি ভয় পাবে।

জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ

জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জানা উচিত। কারণ আমরা সকলে জানি যে জলাতঙ্ক রোগ কুকুর বা বিড়াল এ সকল প্রাণীদের লালার মাধ্যমে ছড়ায়। কুকুর বা বিড়াল কখনো আপনাকে কামড়ে থাকলে 9 থেকে 90 দিন এর মধ্যে, আপনার মধ্যে জলাতঙ্কের কিছু লক্ষণ দেখা দিবে। সেই সকল লক্ষণ জেনে থাকলে আপনি সহজে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
আর যদি জেনে না থাকেন তাহলে আপনি সেই লক্ষণ সম্পর্কে কোন পত্রিক ব্যবস্থা নিতে পারবেন না। যার কারণে আমাদের সকলের জেনে রাখা উচিত জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ সম্পর্কে।

জলাতঙ্ক রোগের প্রাথমিক উপসর্গ গুলো হল
  • মাথা ব্যথা করা
  • গলা ব্যথা করা
  • অতিরিক্ত জ্বর বা হালকা জ্বর
  • যেই জায়গায় কামড়েছে সেই জায়গায় খিঁচুনি বা চুলকানি
  • মুখ থেকে ও অত্যাধিক পরিমাণে লালা নিঃসৃত হওয়া
  • কোনকিছু গিলতে অসুবিধা হওয়া
  • পানি দেখলেই ভয় পাওয়া
  • ঘুম না হওয়া
  • বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়া

জলাতঙ্ক রোগ কেন হয়

জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানার পরেই আমাদের জলাতঙ্ক রোগ কেন হয় সেই সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আমরা অনেকেই জানে যে জলাতঙ্ক রোগ কেন হয়। তার পরেও আমরা অনেকে জানি না যে জলাতঙ্ক রোগ কেন হয়। আপনারা যারা জলাতঙ্ক রোগ কেন হয় সে বিষয়ে জানেন না তাদের সকলের জেনে রাখা উচিত। তাহলে চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক জলাতঙ্ক রোগ কেন হয়।

জলাতঙ্ক রোগ উগ্র/পাগলা পোষা প্রাণির কামড়ে হয়ে থাকে। যে সকল প্রাণি আমরা লালন পালন করি, সেই সকল পানি যদি কখনো উগ্র হয়ে কামড় দেয় তাহলে জলাতঙ্ক রোগ হয়। এই রোগটি প্রাণীদের লালার মাধ্যমে ছড়ায়। পোষা প্রাণী যেমন ঘোড়া, ছাগল, কুকুর, গরু, খরগোশ আক্রান্ত হলে জলাতঙ্ক রোগ হতে পারে। এছাড়াও বন্য প্রাণী যেমন বাদুড়, কোয়োটস, শিয়াল এবং হায়েনারা আক্রান্ত হলে এই রোগ হতে পারে।

জলাতঙ্ক রোগ কিভাবে ছড়ায়

আমরা সকলেই জানে যে জলাতঙ্ক রোগ কেন হয়। এমনভাবে আমাদের সকলের জেনে রাখা উচিত যে জলাতঙ্ক রোগ কিভাবে ছড়ায়। কারণ রোগ কিভাবে ছড়ায় সে বিষয়ে আমাদের ধারণা থাকলে আমরা সেটা প্রতিরোধ করতে পারব। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক জলাতঙ্ক রোগ কিভাবে ছড়ায়।

সকল মাংসাশী প্রাণী জলাতঙ্ক ভাইরাস ছড়াতে পারে। সেই সকল মাংসাশী প্রাণীর ভেতর কোনগুলো রয়েছে সেগুলো আমাদের সকলের জেনে রাখা উচিত। যে সকল মাংসাশী প্রাণীর জলাতঙ্ক ভাইরাস ছড়াতে পারে সেগুলো হল কুকুর, বিড়াল, শেয়াল, ইঁদুর, খরগোশ, বানর, বাদুড়সহ সকল প্রাণীই এই ভাইরাসটি ছড়াতে পারে।

    জলাতঙ্ক রোগের পরীক্ষা

    জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার। জলাতঙ্ক রোগ হলে একজন মানুষ খুব অল্প সময় সাধারণত বুঝতে পারে না। কিন্তু যখন এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় ঠিক তার কিছুদিনের মাথায় সেই লোকটি মৃত্যুবরণ করে। সাধারণত জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার এক সপ্তাহ বা ৭ দিনের মাথায় মানুষটি মারা যায়। এই রোগের তেমন কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা বের হয়নি। তবে একটু পরীক্ষা রয়েছে যার মাধ্যমে এই রোগটি শনাক্ত করা যায়।
    জলাতঙ্ক রোগের পরীক্ষা
    সেই পদ্ধতি টি হল ইমিউনোফ্লোরেসেন্স নামক একটি পদ্ধতি। এই একটি পদ্ধতি টি থেকে আমাদের ত্বকের কিছুটা ছোট টিস্যু ব্যবহার করার মাধ্যমে রেবিস অ্যান্টিজেন সনাক্ত করা হয়। জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির লালা থেকে এই উক্ত ভাইরাসটি আলাদা করা যেতে পারে। অথবা ফ্লরোসেন্ট অ্যান্টিবডি (FA) পরীক্ষা করার মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগের পরীক্ষা করা যায়

    জলাতঙ্ক রোগের প্রতিরোধ

    জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে আমরা এই জলাতঙ্ক রোগের প্রতিরোধ করতে পারবো। জলাতঙ্ক রোগের প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হল টিকা গ্রহণ করা। এছাড়া জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধ করার মত তেমন কোন উপায় নেই। তাই আপনাকে যখন কোন বিড়াল কুকুর কামড়াবে সাথে সাথে টিকা গ্রহণ করুন। এবং ডক্টরের পরামর্শ নিন।

    তাহলে একমাত্র জলাতঙ্ক রোগের প্রতিরোধ করা সম্ভব।এই রোগের প্রতিরোধের জন্য অনেক টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। এর মধ্যে সবথেকে নিরাপদ টিকাটি হলো হিউম্যান ডিপ্লয়েড সেল ভ্যাকসিন (HDCV)

    এছাড়াও আরো কিছু টিকার তালিকা দেওয়া হলো যেগুলো আপনি গ্রহণ করতে পারেন।
    • পিউরিফাইড চিক ইমব্রিও সেল ভ্যাকসিন
    • ডাক ইমব্রিও সেল ভ্যাকসিন
    • নার্ভ টিস্যু ভ্যাকসিন
    বি দ্রঃ এই ওয়েবসাইটে দেওয়া সকল তথ্য শুধুমাত্র আপনার জানার জন্য এবং জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করার জন্য। একজন রোগীকে না দেখে অথবা ভালোভাবে পরীক্ষা না করে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব নয়। তাই আপনি নিজে নিজে কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

    জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

    প্রশ্নঃ জলাতঙ্ক রোগের প্রাথমিক লক্ষণ কি কি?
    উত্তরঃ জলাতঙ্ক রোগের কিছু প্রাথমিক লক্ষণ রয়েছে। সেগুলো হলো
    • জ্বর
    • ক্ষুধামন্দা
    • তন্দ্রা
    • কনফিউশন
    • অনিয়ন্ত্রিত উত্তেজনা
    • লালারসের ক্ষরণ বৃদ্ধি
    • কামড় স্থানের অনুভূতিতে পরিবর্তন হওয়া
    প্রশ্নঃ জলাতঙ্ক কি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়?
    উত্তরঃ জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির লালা যদি অন্য কোন মানুষের মধ্যে কোনভাবে প্রবেশ করে তাহলে তার শরীরেও এই রোগটি ছড়িয়ে যাবে।

    প্রশ্নঃ কুকুর কামড়ালে কি জলাতঙ্ক রোগ হয়?
    উত্তরঃ হ্যা। কুকুর কামড়ালে জলাতঙ্ক রোগ হয়।

    প্রশ্নঃ রেবিস ভ্যাকসিন এর কার্যকারিতা কত দিন?
    উত্তরঃ রেবিস প্রথমবার ভ্যাকসিন দিলে তারপরের ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে বুস্টার ডোজ দিতে হবে। আর এই বুস্টার ডোজের পর তার মেয়াদ থাকে ১ বছর।

    লেখকের মন্তব্য। জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

    আজকে আমাদের এই পাঠের আয়োজন ছিলো জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ - জলাতঙ্ক রোগের প্রতিকার সম্পর্কে। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ - জলাতঙ্ক রোগের প্রতিকার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যদি আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। বকুল ফুল বকুল ফুল সোনা দিয়া হাত কেন বান্ধাই লি

    Post a Comment

    Previous Post Next Post