আমাশয় রোগীর খাবার তালিকাপ্রিয় পাঠক, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনি কি জানার জন্য আগ্রহি? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলে আপনাকে জানাই স্বাগতম। কেননা আজকের এই আর্টিকেলের মধ্যে আমরা ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সহ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
ভিটামিন বি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতেও অনেক বড় ভূমিকা রাখে। তাই এই ভিটামিনের দিকে আমাদেরকে প্রয়োজনীয় পরিমাণে লক্ষ্য রাখা উচিত।

পেজ সূচিপত্রঃ

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

আমরা সকলেই জানি ভিটামিন বি আমাদের শরীরের জন্য অনেক পুষ্টিকর একটি উপাদান। যার ফলে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স প্রতিটি মানুষের প্রতিদিন খাওয়া উচিত। আর এই ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ট্যাবলেট যে সকল মানুষের শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিনের বি এর সকল উপাদান। যেটি আমাদের দেহের স্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।

ভিটামিন বি কমপ্লেক্সে হল জলে দ্রবণের একটি ভিটামিন। যার ফলে এটি আমাদের শরীর থেকে প্রসাবের মাধ্যমে অথবা যে কোন মাধ্যমে বের হয়ে যেতে পারে। এভাবে বের হয়ে যাওয়ার ফলে অত্যাধিক পরিমাণে আমাদের শরীরের ভিটামিন বি এর ঘাটতে দেখা দেয়। অনেকেই জানতে চাচ্ছেন ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আপনিও যদি এই সম্পর্কে জানতে চান তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ভিটামিন বি কমপ্লেস ট্যাবলেট খাওয়ার যেটা নিয়ম রয়েছে তার মধ্যে যে সকল শিশুদের ওজন ৩০ কেজি অথবা তার ঊর্ধ্বে তারা প্রতিদিন এক থেকে দুইটি ট্যাবলেট খেতে পারবে। এবং যে সকল প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিগণ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খেতে চান তারা দিনের দুই থেকে তিনবার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে পারবে। যার অর্থ এই দাঁড়ায় যে আপনি তিন বেলা খাবারের পরে খেতে পারবেন।

তবে এই ক্ষেত্রে ডাক্তার যদি আপনাকে এক বার খেতে বলে তাহলে অবশ্যই সকালে খাবারের পরে খান। আর যদি দুইবার খেতে বলে তাহলে সকালে এবং রাতে খাবারের পরে খান। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট এর মধ্যে রয়েছে জিংক অনেক পরিমাণ এবং বায়োলজিক্যাল ফাংশন। যেটা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে শরীরের ক্ষত সারাতে এবং পরিপাক প্রজনন করতে শারীরিক বৃদ্ধি ভালোভাবে করতে সহযোগিতা করে।

শিশু বয়স্কদের মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে এবং সঠিক কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে এবং তার পাশাপাশি আমাদের শরীরের রক্তের লোহিত কণিকা বৃদ্ধি করার জন্য ভিটামিন বি কমপ্লেক্স অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ভিটামিন বি এর অভাবে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির দুর্বলতা, ভারসাম্যহীনতা, বিরক্তিভাব, স্মৃতিভোম এ সকল সমস্যা দেখা যেতে পারে। এছাড়া যদি ভিটামিন বি এর অত্যাধিক পরিমাণে ঘাটতি হয়ে যায় আমাদের শরীরে তাহলে বমি বমি ভাব, ঘন ঘন ইনফেকশন অথবা চর্মরোগ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

তবে আপনি উপকারের কথা চিন্তা করে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খেয়ে ফেলেন তাহলে আপনার ক্ষেত্রে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। সেই সকল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলোর মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব হওয়া অথবা বমি হওয়া, ডায়রিয়া হওয়া, পাকস্থলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হওয়ার ইত্যাদি ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করার চেষ্টা করুন।

এই ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট যে সকল মায়েরা গর্ভাবস্থায় রয়েছে অথবা স্তন্যদানকালে রয়েছেন তাদের এই সময়টাতে ভিটামিন বি কমপ্লিক্স ট্যাবলেট খাওয়াটা অনেক জরুরী। কারন এই সময়টাতে শরীরের শক্তি অনেক প্রয়োজন। তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খাওয়ার জন্য চিন্তা ভাবনা করবেন।

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর কাজ

আমরা সকলেই জানি অনেকগুলো ভিটামিন উপাদান মিলে তৈরি হয় ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। যার প্রত্যেকটি উপাদান মানুষের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্ব বহন করে। আলাদা আলাদা কিছু ক্ষমতা এবং কাজ রয়েছে। আপনার শরীরের মধ্যে যদি কিছু অভাব দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই ভিটামিন বি কমপ্লেক্স গ্রহণ করতে হবে।

আপনার শরীর থেকে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়ে যায় অথবা অল্প বয়সের চুল পেকে যায় তাহলে এই অবস্থায় আপনার উচিত হবে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স খাওয়া। তার পাশাপাশি যদি পাবনার হাতে পায়ে নিয়মিত পরিমাণে ঝিঝি ধরে তাহলে আপনাকে বুঝে নিতে হবে আপনার শরীরের ভিটামিন বি এর ঘাটতি রয়েছে। এই অবস্থায় অবশ্যই আপনাকে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স খেতে হবে।

এছাড়াও আরো কিছু উল্লেখযোগ্য লক্ষণ গুলোর মধ্যে রয়েছে ঠোঁটের কর্নারের ঘা হওয়া অথবা মুখের ভেতরের ঘা হওয়া। কিংবা আপনার মুখে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে লালা জমে থাকে তাহলে বুঝে নেবেন আপনার শরীরে ভিটামিন বি এর ঘাটতি রয়েছে। এছাড়াও ভিটামিন বি এর অভাবে পায়ের গোড়ালি ফেটে যায়। চলুন তাহলে এবার ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর কাজ সম্পর্কে জেনে নেই।

ভিটামিন-বি ১ঃ এই ভিটামিন-বি ১ কে থায়ামিনন হিসেবে অনেকেই ডেকে থাকেন। এই ভিটামিনের উপাদানটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের শর্করার অভাব পূরণ করার এছাড়া শর্করাতে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে এতে শক্তিমুক্ত করে। এটি আমাদের স্বাভাবিক ক্ষুদা বজায় রাখার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এর পাশাপাশি স্নায়ুতন্ত্রের সকল কার্যক্রম সঠিকভাবে বজায় রাখার জন্য অনেক ভালো উপকারী।

ভিটামিন-বি ২ঃ এই ভিটামিনের উপাদানটি অনেক ভালো এবং আমাদের শরীরের পক্ষে অনেক উপকারী একটি উপাদান। যেটি আমাদের শরীরের বিদ্যমান অ্যামিনো এসিড এবং হেঁটে আসিড একসঙ্গে কার্বোহাইডেট এর বিপাক কাজ অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করতে সাহায্য করে। এবং এর পাশাপাশি হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অনেক ভালো কাজ করে।

ভিটামিন-বি ৩ঃ এই ভিটামিন-বি ৩ ভিটামিনের এই উপাদানটি হার্টের সমস্যা থেকে রক্ষা করার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এই ভিটামিনের উপাদানটি যদি আমাদের শরীরের মধ্যে থাকে তাহলে বাজে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্ললেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এবং বিভিন্ন ধরনের শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত সমস্যা সৃষ্টি থেকে রক্ষা করে থাকে।

ভিটামিন-বি ৫ঃ আমাদের শরীরের ভিটামিনের বিভিন্ন ধরনের ঘাট দূর করে থাকে এই ভিটামিন বি ৫। এটি আমাদের শরীরের কোষের গঠনের পরিমাণ বৃদ্ধির এছাড়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করে থাকে।

ভিটামিন-বি ৬ঃ আমাদের শরীরে ভিটামিনের এই উপাদানের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। ভিটামিন আমাদের শরীরের শক্তি উৎপাদন করার জন্য অনেক ভালো ভূমিকা রাখে। এছাড়াও এই ভিটামিন আমাদের শরীরের জন্য প্রায় ১০০ ধরনের এন্জাম রিএকশন ঠিকমতো হয় সেইদিকেও লক্ষ রাখে।

ভিটামিন-বি ৭ঃ যদি সুস্থ বিপাকক্রিয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে ভিটামিন-বি ৭ এর প্রয়োজন অনস্বীকার্য। তার কারণ হলো আমাদের ত্বক, হজমতন্ত্র এবং বিপাকক্রিয়ার উৎপন্ন হয় এই ভিটামিন থেকে। ভিটামিনের এই উপাদানটি আমাদের শরীরের কর্মশক্তির ও পর্যাপ্ত পরিমাণে যোগান দেয়।

ভিটামিন-বি ৯ঃ এই ভিটামিন উপাদানটি সুস্থ এবং স্বাভাবিক থাকার ক্ষেত্রে গর্ভধারণ এবং গর্ব অবস্থায় খুবই জরুরী একটি ভিটামিন উপাদান। এই তথ্যটি উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড এন্ড নিউট্রিশন বোর্ড এর গবেষণাগার মাধ্যমে। তিনারা জানিয়েছেন কোনো নারী যদি সন্তান ধারণ করার সময় আসে তাহলে সেই নারীর উচিত ৪০০ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত ফলিক এসিড ড বা এই ভিটামিন উপাদানটি গ্রহণ করা।

ভিটামিন-বি ১২ঃ ভিটামিন কমপ্লেক্সের এই উপাদানটি আমাদের স্নায়ুর জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি ভিটামিন উপাদান। আমাদের মস্তিষ্ক এবং ইসলামের বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে এই ভিটামিন উপাদানের প্রয়োজন রয়েছে। এই ভিটামিন উপাদান প্রাকৃতিকভাবে প্রাণিজ খাবারের মাধ্যমে পাওয়া যায়। যদি আপনি পারেন তাহলে এই খাবার আপনি সাপ্লিমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন।

ভিটামিন বি এর উপকারিতা

আমরা সকলেই ইতিপূর্বে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছি। এই পর্যায়ে আমরা সকলে জানবো ভিটামিন বি এর উপকারিতা সম্পর্কে। এই ভিটামিন বি সাধারণত চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয় যে সকল ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ভিটামিন বি এর প্রচন্ড পরিমাণে ঘাটতি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে। আপনি যদি ভিটামিন বি কমপ্লেক্স গ্রহণ করেন তাহলে কিছু উপকারিতা পাবেন। সেগুলো হলো
  • বিপাক ক্রিয়ার উন্নতি সাধন করবে
  • লিভারের স্বাস্থ্য ঠিক রাখবে
  • কিডনির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করবে
  • শরীরে লোহিত কণিকার উৎপাদন বৃদ্ধি করে রক্তস্বল্পতা দূর করবে
  • চুল এবং ত্বকের উন্নতি ঘটাবে
  • স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করবে
  • ডিমনেসিয়া প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে
  • শরীরের হাড় গঠনের স্বাস্থ্য বজায় রাখবে
  • ক্লান্তি অনুভূত হওয়া, শরীরে বিষন্নতা এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে
আপনি যদি ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট নিয়মিত গ্রহণ করেন তাহলে উপরের এই সকল উপকারিতা গুলো আপনি উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া আপনার শরীরে যদি ভিটামিন বি এক প্রচন্ড পরিমাণে ঘাটতি হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে তারপরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

ভিটামিন বি ১২ এর অভাবে কোন রোগ হয়

আপনি কি জানেন ভিটামিন বি ১২ এর অভাবে কোন রোগ হয়? আপনি যদি এই বিষয়ে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলের এই অংশটি অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কারণ এই অংশে আমরা আলোচনা করতে চলেছি যদি আমাদের শরীরের ভিটামিন বি ১২ এর অভাব হয়ে যায় তাহলে কোন কোন রোগ হতে পারে। চলুন তাহলে এই বিষয়ে এখন জেনে নেওয়া যাক।

আমরা সকলেই জানি ভিটামিন আর খনিজ এই দুটি উপাদানই আমাদের শরীর সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। তাই আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য প্রতিদিন নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে। যদি আপনার শরীরে অত্যাধিক পরিমাণে পুষ্টির অভাব হয়ে যায় তাহলে শরীরের ভেতর থেকে আস্তে আস্তে ভাঙ্গা শুরু হবে। যদি আপনি সহজে বুঝে উঠতে পারবেন না। তেমনি রয়েছে এই ভিটামিন বি ১২ এর উপকারিতা। এটি আমাদের শরীরের ভেতরে লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি করে।

যদি আপনার শরীরের ভিটামিন বি ১২ এর অভাব হয়ে যায় তাহলে সেখান থেকে অত্যাধিক পরিমাণে সমস্যা উদঘাটন হতে পারে। তার জন্য আপনার ক্লান্তি, নিজেকে দুর্বল অনুভব করা, প্রচন্ড মাথা ব্যথা করা, শ্বাসকষ্ট, জিহ্বা লাল হয়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা, ডায়রিয়া এমন আরো অত্যাধিক সমস্যার উদাঘাটন হতে পারে। তাই আপনার শরীরে যদি এমন কোন সমস্যার উপদ্রব দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই সতর্ক হবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

মাথা ব্যথা করাঃ আমাদের অনেকের ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায় যে প্রয়াসী মাথাব্যথা লেগেই থাকে। এর প্রধান কারণটি হল ভিটামিন বি ১২ এর শরীরে অনেক অভাব। যার ফলে আমাদের এই স্নায়ুতন্ত্র এবং স্মৃতিসক্তর উপর অনেক বেশি চাপ পড়ে যায়। আর এরই ফলে আমাদের অনেকের ভুলে যাওয়ার মত বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়।

হাত-পা কাঁপাঃ আমাদের শরীরে যাদের ভিটামিন বি ১২ এর অত্যাধিক পরিমাণে অভাব রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে হাত পা কাঁপা হঠাৎ করে হাত-পা শিহরে ওঠা এমন ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে এই সমস্যাটি আপনার শরীরে সর্বাঙ্গই হতে পারে। এছাড়াও যদি ভিটামিনের অভাব হয় তাহলে রক্তস্বল্পতার কারণে এই সমস্যা দেখা যেতে পারে। আর এখান থেকে আপনার ত্বক হলুদ ফ্যাকাশে ধরনের হয়ে ওঠার ঘটনা ঘটতে পারে। এই সময় অবশ্যই আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি ১২ খাওয়ার চেষ্টা করুন।

ক্লান্ত অনুভূত হওয়াঃ ক্লান্তি আমাদের সকলেরই রয়েছে। এটি অনেক সাধারন একটি লক্ষণ। যদি আপনার শরীরে ভিটামিন বি ১২ এর অভাব হয়ে যায় তাহলে শরীরে রক্ত কণিকার উৎপাদন কম হয় রক্তের ঘাটতি দেখা দেয়। যার ফলে আপনার শরীর অনেক ক্লান্ত বলে মনে হয়। এই অবস্থায় আপনি ভিটামিন বি খাওয়ার চেষ্টা করুন।

আপনার শরীরে যদি অত্যাধিক পরিমাণে ভিটামিন বি ১২ এর অভাব হয়ে থাকে তাহলে এই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য আপনি অবশ্যই ভিটামিন বি কমপ্লেক্স গ্রহণ করবেন। এছাড়াও আপনি প্রতিদিন পর্যন্ত পরিমানে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, বাদাম, পনির সকল খাবার খেতে পারেন। এছাড়াও আপনার উচিত হবে একজন ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা।

ভিটামিন বি ২ এর অভাবে কি হয়

ভিটামিন বি১২ এর পাশাপাশি ভিটামিন বি ২ এর লক্ষণের অনেকটা মিল রয়েছে। এক্ষেত্রে এটি আমাদের মানব দেহের উপর মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। তাই যদি আপনার ক্ষেত্রে ভিটামিন বি ২ এর লক্ষণ প্রকাশ পায় তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। আর প্রয়োজনিয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। যে সকল লক্ষণ গুলো আপনার শরীরের মধ্যে প্রকাশ পেলে বসতে হবে আপনার ভিটামিন ২ এর অভাব রয়েছে সেগুলো নিম্ন উল্লেখ করা হলো।
  • ভীষণ রকম শরীর দুর্বলতা
  • গলা ব্যথা করা
  • নিজেকে ক্লান্ত মনে করা
  • চোখে কম দেখা অথবা চোখে অনেক ধরনের সমস্যা
  • হাত-পা ঝিমঝিম করা
  • মুখের ভেতরে আলসার সৃষ্টি হওয়া
  • ঠোট লাল হয়ে থাকা
  • ডার্মাটাইসের সমস্যা
  • মিউকাস পর্দার ভেতরে তরল পদার্থ জমা হওয়া
উপরের উল্লেখিত এই সকল লক্ষণগুলি যদি আপনার শরীরে প্রকাশ পায় তাহলে অবশ্যই আপনাকে বুঝে নিতে হবে আপনার শরীরের ভিটামিন ২ এর অভাব রয়েছে। এ সময় যদি আপনি চান তাহলে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খেতে পারেন। আর হ্যাঁ অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

ভিটামিন বি জাতীয় খাবার

আপনারা অনেকেই জানতে চান ভিটামিন বি জাতীয় খাবার সম্পর্কে। কোন কোন খাবার খেলে ভিটামিন বি পাওয়া যায় সেই সকল খাবার সম্পর্কে আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব। এর প্রধান কারণ হলো আমাদের জেনে রাখা উচিত কোন খাবারগুলো খেলে ভিটামিন বি পাওয়া যায়। আর এই ভিটামিন বি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকারী সেটা তো আপনারা ইতিপূর্বে জানতে পেরেছেন।
ভিটামিন বি জাতীয় খাবারের মধ্যে যেসকল খাবারগুলো রয়েছে সেগুলো হলো
  • মাছ
  • মাংস
  • দুধ
  • ডিম
  • পনির
  • দই
  • মাশরুম
  • পালং শাক
  • মটরশুটি
  • ছোলা
  • বাদাম
  • তরমুজ
  • বিট
  • কিডনি বিন
  • অ্যাভোকোডা
  • সয়া জাতীয় পণ্য
উপরের উল্লেখিত এই সকল খাবার খেলে আপনি খুব সহজে আপনার শরীরের ভিটামিন বি এর যোগান দিতে পারবেন। তবে আপনাদের একটি কথা জানিয়ে রাখি ভিটামিন বি কমপ্লেক্স হলো একটি প্রাণিত দ্রবণীয় খাবার। যেটি আমাদের শরীর থেকে পানি বের হওয়ার সাথে সাথে বের হয়ে যায়। আর এজন্যই আমাদেরকে এই সকল খাবার গুলো নিয়মিত খাওয়া উচিত।

আর এই কারণেই বাহিরের বিভিন্ন দেশের আইন অনুসারে প্রয়োজন অনুযায়ী খাবারের সাথে রাইবোফ্লাবিন, থায়ামিন, ফলিক এসিড গুলো সাদা-ময়দার সাথে মেশানো হয়। টাকি এবং টুনা মাছে ভিটামিন বি উপাদান বেশি পরিমাণে থাকে। এছাড়াও আপনি সিম জাতীয় খাবার গ্রহণের মাধ্যমে শরীরে পর্যন্ত পরিমাণে ভিটামিন বি এর যোগান দিতে পারেন।

ভিটামিন বি জাতীয় ফলের নাম

আমরা তো সকলেই ইতিপূর্বে ভিটামিন বি জাতীয় খাবার জানতে পেরেছি। এই পর্যায়ে আমরা সকলেই জানব ভিটামিন বি জাতীয় ফলের নাম সম্পর্কে। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিত ভিটামিন বি জাতীয় ফল গ্রহণ করেন তাহলে আপনার শরীরে ভিটামিন বি এর কোন ঘাটতি থাকবে না। যদি আপনার নিয়মিত এই সকল খাবার গ্রহণ না করেন তাহলে এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বড় ক্ষতি থেকে আনতে পারে।

ভিটামিন ডি যেহেতু তরল পদার্থ। তাই এটি আমাদের শরীর থেকে পানি নির্গত হওয়ার সাথে সাথে বের হয়ে যায়। তাই আপনি যদি নিয়মিত পরিমানে ভিটামিন বি জাতীয় খাবারগুলো গ্রহণ করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার ভিটামিন বি এর অভাব পূরণ হবে। যে সকল ফলগুলো খাওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরে ভিটামিন বি এর যোগান দেওয়া যেতে পারে সে সকল ফলগুলো হলো
  • কলা
  • আপেল
  • কমলা
  • মাল্টা
  • আনার
  • ব্লুবেরি
  • আম
  • ড্রাগন ফল
  • এবং অন্যান্য সকল ফল
আপনার শরীরে যদি ভিটামিন বি এর অভাব হয়ে যায় তাহলে এটি আপনার শরীরকে সঠিকভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে বাধা দিবে। যার ফলে আপনার শরীরের ক্লান্তি অনুভূত হওয়ার পাশাপাশি আরো যে সকল সমস্যা হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে মাথা ঘোরা, হাত-পা ঝিমঝিম করা, রক্তশূন্যতা এই সকল সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। তাই আপনাকে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন ভিটামিন বি জাতীয় খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।

এক্ষেত্রে আপনি ভিটামিন বি জাতীয় গ্রহণ করতে পারেন। কারণ এটি আমাদের শরীরের ভেতরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই সফল উপাদানের থেকে যদি আপনার শরীরে কোন একটির ঘাটতে দেখা যায় তাহলে আপনার মানসিক দুর্ঘটনার সাথে সাথে শারীরিক দুর্বলতা ও দেখা দিতে পারে। আশা করছি আপনারা সম্পন্ন বিষয় সম্পর্কে অবগত হয়েছেন।

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্নঃ দিনে ২ বার বি কমপ্লেক্স খাওয়া যাবে কি?
উত্তরঃ দিনে ২ বার 300 মিলিগ্রাম পর্যন্ত আপনি বি কমপ্লেক্স খেতে পারেন।

প্রশ্নঃ বি কমপ্লেক্স কতদিন পর পর খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ ভিটামি বি কমপ্লেক্স আপনি নিয়োমিত দিনে ১ বার গ্রহণ করতে পারেন।

প্রশ্নঃ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স কি কোন কোন খাদ্যে এই ভিটামিন পাওয়া যায়?
উত্তরঃ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যেসকল খাদ্যে পাওয়া যায় সেগুলো হলো
  • মাছ
  • মাংস
  • দুধ
  • ডিম
  • পনির
  • দই
  • মাশরুম
  • পালং শাক
  • মটরশুটি
  • ছোলা
  • বাদাম
  • তরমুজ
  • বিট
  • কিডনি বিন
  • অ্যাভোকোডা
  • সয়া জাতীয় পণ্য
প্রশ্নঃ ভিটামিন বি ১২ ঔষধের নাম কি?
উত্তরঃ ভিটামিন বি ১২ ঔষধের নাম হলো মেট বি ১২ ৫০০ এম সি জি ট্যাবলেট (Met B12 500 MCG Tablet)

প্রশ্নঃ ভিটামিন বি ১২ কমে গেলে কি হয়?
উত্তরঃ ভিটামিন বি ১২ কমে গেলে যেসকল সমস্যাগুলি হয় সেগুলো হলো
  • ক্লান্তি
  • দুর্বলতা
  • ফ্যাকাশে বা জন্ডিসযুক্ত ত্বক
  • হাত ও পায়ে অসাড়তা
  • শরীর ঝাঁকুনি দেওয়া
  • হাঁটতে অসুবিধা
  • স্মৃতিশক্তির সমস্যা
প্রশ্নঃ ভিটামিন বি 12 এর অপর নাম কি?
উত্তরঃ ভিটামিন বি 12 এর অপর নাম হলো সায়ানোকোবালামিন।

প্রশ্নঃ ভিটামিন b12 এর স্বাভাবিক মাত্রা কত?
উত্তরঃ ভিটামিন b12 এর স্বাভাবিক মাত্রা হলো ১৬০ থেকে ৯৫০ পিকোগ্রাম প্রতি মিলিলিটার (pg/mL) অথবা ১১৮ থেকে ৭০১ পিকোমোলস প্রতি লিটার (pmol/L)

লেখকের মন্তব্য

ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছি। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে সকল বিষয়ে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন। এই সম্পর্কে যদি আপনার কোন জিজ্ঞাসা থেকে থাকে তাহলে অমাদেরকে মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে পারেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Post a Comment

Previous Post Next Post