ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতাপালং শাক খেতে তো আমরা সকলেই পছন্দ করি। কিন্তু আপনি জানেন কি পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আপনি যদি পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে না জেনে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। সম্পূর্ণ আর্টিকেল শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
পালং আমাদের দেশে প্রায় কম বেশি সকল জায়গাতেই চাষ হয়ে থাকে। এবং আমাদের দেশের মাটি পালং চাষের জন্য অনেক উর্বর। পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে অনেক। যেগুলি জানলে আপনি অবাক হবেন। তাহলে চলুন এখন বেশি দেরি না করে বিস্তারিত আলচনায় যাওয়া যাক।

পেজ সুচিপত্রঃ পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা 

ভূমিকা। পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা

আমাদের দেশে শীতের আগমন ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। শীত আসলেই বাজারে পালং শাক উঠতে শুরু করে দিবে। এই পালং শাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি থেকে আরো নানা ধরণের খনিজ উপাদান পাওয়া যায়। পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।

আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকেন তাহলে আপনি পালং এর অর্থ কি? পালং শাক খাওয়ার নিয়ম, পালং শাকে কোন ভিটামিন থাকে, পালং শাকে কি এলার্জি আছে, পালং শাকের জুসের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন এখন আমরা এই সকলকিছু জেনে নেই।

পালং শাকের উপকারিতা

পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে অনেক। যেগুলি আমাদের সকলকে জানা উচিত। কারণ একটি উপাদানের উপকারিতে আনা জানলে আমরা সেই বিষয়ে উদাসিন হয়ে থাকি। এই সকল উপাকারিতা সম্পর্কে আমরা যখন জানতে পারব তখন আমরা সকলেই অনেক সচেতনভাবে তা পালন করতে সক্ষম হবো। তাহলে চলুন এখন পালং শাকের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
রক্তচাপ কমায়ঃ আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ম্যাগনেসিয়াম এর প্রয়োজন হয়। আর এই উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেসিয়াম পালং শাকে রয়েছে। যেটা আমাদের শরীরের রক্তের চাপ কমানোর জন্য অনেক সাহায্য করে।

চোখের ছানি ঝুঁকি রোধঃ আমাদের শরীরে যদি করোডিন এর মাত্রা কমে যায় তাহলে আমাদের চোখে ছানি দেখা দেয়। এই করোটিন রয়েছে পালং শাকে যেটা অনেক উচ্চমাত্রার। আর এই করোটিন আমাদের চোখের ছানি পড়া কমাতে সাহায্য করে

ক্যান্সার রোধকঃ পালং শাকে ১০টিরও অধিক পরিমাণে বিভিন্ন ধরণের ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে। যা আমাদের মরণব্যাধি খ্যাত ক্যান্সারসহ আরো বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগ এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়ার কাজ করে।

হৃদ যন্ত্রের সুরক্ষাঃ পালং শাকে অনেক ফলিক এসিড থাকে। যা আমাদের শরীরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পার্ট হৃদ যন্ত্রের সুরক্ষা করার জন্য একটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

দেহের ওজন হ্রাসঃ আপনি যদি আপনার শরীরের ওজন কমাতে চান তাহলে আপনি পালং শাক বেছে নিতে পারেন। কারণ এতে অনেক কম ক্যালরি। প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে ক্যালরির পরিমাণ রয়েছে মাত্র ৭ কিলোক্যালরি। যেটা আমাদের শরীরের ওজন কমানোর জন্য অনেক সাহায্য সহযোগিতা করে।

ত্বকের স্বাস্থ্য ঠিক রাখেঃ পালং শাকে ভিটামিন 'এ' উপাদান পাওয়া যায়। যা আমাদের ত্বকের বাহিরের আদ্রতা বজায় রেখে আমাদের ত্বককে অনেক সুস্থ্য ও স্বাভাবিক রাখে। যার কারণে আমাদের ত্বকে ব্রণ বা বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।

এই সকল প্রধান কাজ ছাড়াও আরো অনেক কাজ করে পালং শাক। যেমন দেহের ক্লান্তিভাব দূর করে, প্রদাহ জনিত সমস্যা রোধ করে থাকে, দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ইত্যাদি।

পালং শাকের অপকারিতা

পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে আমরা ইতিপূর্বে পালং শাকের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছি। এখন আমরা পালং শাকের অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেব। আমরা ইতিমধ্যে পালংশাকের অনেক উপকারিতার কথা জানতে পেরেছি। পালং শাকের এতো উপকারিতা থাকা সত্বেও এরও অনেক অপকারিতা রয়েছে। চলুন তাহলে এখন পালং শাকের অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

যেকোন জিনিসেরই দুইটি দিক থাকে। একটি তার ভালোদিক, আর অন্যটি তার খারাপ দিক। তেমনি পালংশাকেরও একটি ভালো দিক ও একটি খারাপ দিক রয়েছে। যেইটা আমাদের সকলেরই জানা উচিত। তা না হলে এর উপকারি দিক জেনে অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করার মাধ্যমে আরো নিজেকে বিপদের মধ্যে ঠেলে ফেলে দিব।

কিডনিতে পাথরঃ আমাদের শরীরের কিডনিতে পাথর হওয়ার জন্য যেই উপাদানটি দায়ী সেটি হলো অক্সালেট। আর পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে অক্সালেট থাকে। আপনি যদি পালং শাক অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করেন তাহলে আপনার শরীরের কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে।

রক্ত পাতলাকারী ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট করেঃ পালং শাকে একটি ভিটামিন উপাদান পাওয়া যায়। যেটি হলো ভিটামিন কে। যেটি আমাদের শরীরের রক্ত পাতলাকারী ঔষধের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। রক্ত পাতলাকারী ঔষধ দেওয়া হয় যেসকল ব্যাক্তি স্ট্রোক করেন তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানোর জন্য।

পেটের সমস্যা হতে পারেঃ আমরা সকলেই জানি পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। আর পালং শাকের এই উচ্চ ফাইবারের কারণে আমাদের শরীরে যেসকল প্রভাব ফেলতে পারে সেগুলি হলোঃ
  • পেটে গ্যাস হওয়া
  • পেটের ফোলাভাব এবং
  • পেটের ক্র্যাম্প
অ্যালার্জি হতে পারে
পালং শাক অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার কারণে শরীরে অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। কারণ আমরা সকলেই জানি সবুজ শাক সবজিতে হিস্টামিন নামক উপাদান থাকে। এটি এমন একটি রাসায়নিক পদার্থ যা শরীরের খুব সামান্য পরিমাণ কোষে পাওয়া যায়। যেইটা অনেক ক্ষেত্রে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

আপনি যদি উপরের সম্পূর্ণটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করছি আপনি এতক্ষণে পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। তাহলে চলুন এখন পরের ধাপে যাওয়া যাক।

পালং শাক খাওয়ার নিয়ম

পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা জানার পরেই আমাদেরকে অবশ্যই এই পালং শাক খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে। এমন প্রশ্ন যদি কেউ করি তাহলে সবাই বলবে পাগলের মতোন কি সব আজে বাজে প্রশ্ন করতেছিস। পালং শাক খাওয়ার আবার কোন নিয়ম আছে নাকি। আপনাদের কে জানিয়ে রাখি পালং শাক খাওয়ার আসলেই কিছু নিয়ম রয়েছে। যেগুলি মেনে আমরা পালং শাক খেলে তাতে থেক অনেক পুষ্টি পাবো।
পালং শাক খাওয়ার নিয়ম
এমনিতেও পালং অনেক পুষ্টিগুলে ভরপুর। আশা করছি আপনি ও হয়ত জানেন না পালং শাক খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে চলুন এখনই এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে আমরা জেনে নেই পালং শাক খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।চলুন তাহলে এখন বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাক।

আপনারা হয়তো অনেকেই জেনে থাকবেন আবার হয়ত অনেকেই জানেন না যে সবুজ শাক সবজিতে প্রচুর পরিমাণে "লুটেইন" থাকে। এই "লুটেইন" আমাদের শরীরের ভেতরে অতিরিক্ত মাত্রায় চর্বি জমে রক্তনালী বন্ধ হওয়ার যে ঝুঁকি থাকে সেটি অনেকটাই কমিয়ে দেয়। সেই সাথে সাথে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও অনেকগুনা বৃদ্ধি করে দেয়।

এই "লুটেইন" উপাদান সবথেকে বেশি পরিমাণে পালং শাকে পাওয়া যায়। তাই সকল গবেষকগণ পালং শাক রান্না না করে বরং কাঁচা অবস্থায় খেতে বলেন। তার কারণ হলো যদি পালং শাক রান্না করে খাওয়া হয় তাহলে পালং শাকে থাকা এই "লুটেইন" নামক অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নষ্ট হয়ে যায়।

সুইডেনে একটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যার নাম হলো লিংকোপিং বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়, পালং শাক রান্না নয়, সবথেকে বেশি পুষ্টি পাওয়া যাবে কাঁচা অবস্থায় খেলে। তারা অনেক গবেষণা করে দেখেছেন পালং শাক উচ্চ তাপে দুই মিনিট ভাজলেই পালং শাকের বিদ্যমান "লুটেইন" নামক উপাদান একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়।

তাই গবেষকগণ পালং শাক রান্না না করে কাঁচাই খাওয়ার জন্য বলেছেন। আপনি যদি এমনি কাঁচা না খেতে পারেন তাহলে সালাদ করে তার সাথে কিছু ক্রীম মিশিয়ে ও খেতে পারবেন। তবে অবশ্যই রান্না করে খাওয়া যাবে না। সেটা থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি পাওয়ার জন্য কাঁচা খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

পালং শাকে কোন ভিটামিন থাকে

শীতের শুরুতেই বাজারে পালং শাকের আগমন ঘটতে শুরু করে। এই শাক আমাদের দেশে অনেক পরিচিত একটি শাক। এই পুষ্টিকর সবজীতে অনেক পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। যেটা আমাদের শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে অনেক উপকারি। পালং শাক খেতে যেমন মজা তেমনি এই পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা ও রয়েছে অনেক।

পালং শাকে কোন ভিটামিন থাকে এইটা আমরা অনেকেই জানি না। তাই সকলেই আমরা জানার জন্য গুগলে বা ইউটিউবে খোঁজাখুঁজি করে থাকি। আপনি ও যদি সেই অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পান তাহলে এখনই জেনে নিনি পালং শাকে কোন ভিটামিন থাকে।

পালং শাকে মূলত ৫টি উপাদান থাকে যেগুলি আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বহন করে থাকে। পালং শাকে বিদ্যমান গুরুত্বপূর্ণ ৫টি উপাদান হলো
  • ভিটামিন এ
  • ভিটামিন বি
  • ভিটামিন সি
  • ভিটামিন ই, এবং
  • আয়রন

পালং শাকের সম্পর্কে সাধারণ জিঙ্গাসা

প্রশ্নঃ পালং শাক কত প্রকার
উত্তরঃ পালং শাকের তিনটি প্রধান জাত রয়েছে। সেগুলি হলো
  • স্যাভয়
  • আধা-সাভয় এবং
  • চ্যাপ্টা-পাতাযুক্ত
প্রশ্নঃ পালং এর অর্থ কি?
উত্তরঃ পালঙ, পালং, পালম /বিশেষ্য পদ/ এক রকম পুষ্টিকর শাক।

প্রশ্নঃ পালং শাক কোন পাতার?
উত্তরঃ পালং শাক একটি পাতাযুক্ত সবুজ ফুলের উদ্ভিদ।

প্রশ্নঃ পালং শাক এর অপর নাম কি?
উত্তরঃ পালং শাক এর অপর নাম হলো সুইস চার্ড।

লেখকের মন্তব্য। পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা

আজকের আমাদের আর্টিকেলের প্রধান আলোচনার বিষয় ছিলো পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আশা করছি আপনি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছে। আর সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে পালং শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন।

আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এই রকম তথ্যবহুল আর্টিকেল প্রতিদিন পড়ার জন্য প্রতিদিন নিয়োমিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আজকের মতো এই পর্যন্তই দেখা হচ্ছে পরবর্তি কোন একটি এই রকম আরো তথ্যবহুল আর্টিকেল নিয়ে। সে পর্যন্ত ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post