মিল্ক শেক এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াআপনি কি প্রতিদিন মিল্ক শেক খান? তাহলে অবশ্যই আপনাকে মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম জানা উচিত। মিল্ক শেক হলো শরীরের জন্য অনেক পুষ্টিকর একটি নাস্তা। এটি তৈরি করা হয় বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর উপাদান দিয়ে। যার ফলে এটি খেলে এতে থাকা উপাদান তাৎক্ষণিকভাবে শরীরকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।
মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম
বর্তমানে অনেকেই প্রায় এখন জাঙ্ক ফুডের সাথেই মিল্ক শেকের তুলণা করে থাকেন। কিন্তু এটি মোটেও উচিত নয়। আজকের এই সম্পূর্ণ পাঠের মধ্যে আপনি মিল্ক শেক এর সকল পুষ্টিগুন ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম এবং মিল্ক শেক এর দাম কত বাংলাদেশে এই স্কল বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

পেজ সূচিপত্রঃ

মিল্ক শেক এর পুষ্টিগুন

আমরা সকলেই প্রতিনিয়ত অনেক ধরণের খাবার খাই। আর এই খাবার থেকে কিছু পুষ্টি পাওয়া যায়। এই সকল পুষ্টি উপাদানগুলো অনেক দক্ষতার সাথে আমাদের শরীরের সকল কাজ করতে থাকে। যার জন্য এটি আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগানের পাশাপাশি আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ ব্যাধির সংক্রণ থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

মিল্ক শেক যখন আমরা খাবো তখন যদি এর সকল নিয়মগুলো মেনে খাই তাহলে এটি আমাদের শরীরের পুষ্টির একটি অনেক ভালো উৎস হবে। আরে মিল্ক শেক হল আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগানের অনেক ভালো একটি উৎস। আমাদের মধ্যে অনেকজন রয়েছেন তিনারা মিল্ক শেক এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে ভালোভাবে জানে না। তবে আপনাদেরকে একটি বিষয় জানিয়ে রাখি মিল্ক শেকে থাকা উপাদান গরমের সময় আমাদেরকে সতেজ রাখার জন্য অনেক ভালোভাবে কাজ করে।

মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম মেনে যদি আপনি প্রতিদিন খান তাহলে এটি আপনার শরীরের সকল ধরনের প্রয়োজনীয় পুষ্টির অনেক ভালো উৎস হবে। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু উপাদান হলো কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, খনিজ এবং প্রোটিন। যেহেতু মিল্ক শেক তৈরি করার সময় অনেক ধরনের উপকরণ ব্যবহার করা হয় তাই এতে পুষ্টি মানের পরিমাণ অনেকটাই বেশি থাকে।

তবে মিল্ক শেক খাওয়ার সময় যদি আপনি সঠিক নিয়ম মেনে খান তাহলে আপনি প্রচুর পরিমাণে শরীরে পুষ্টির যোগান দিতে পারবেন। তাহলে চলুন এই পর্যায়ে এখন আমরা একটি ছকের মাধ্যমে জেনে নেই প্রতি ১০০ গ্রাম মিল্ক শেকের ভেতরে কি পরিমাণে পুষ্টিগুন থাকে।

মিল্ক শেক এর পুষ্টি উপাদান

পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ

সোডিয়াম

৯৫ মিলিগ্রাম

সুগার

১৮ গ্রাম

ক্যালসিয়াম

১৪%

ক্যালোরি

১১১.৯ গ্রাম

ম্যাগনেসিয়াম

৩%

পটাশিয়াম

১৮৩ মিলিগ্রাম

প্রোটিন

৩.৯ গ্রাম

ফ্যাট

১.৯ গ্রাম

শর্করা

১৮ গ্রাম

ভিটামিন ডি

১২%

কোলেস্টেরল

১২ মিলিগ্রাম

উপরের উল্লিখিত এই সকল পুষ্টিগুনগুলো প্রতি ১০০ গ্রাম মিল্ক শেক এর পুষ্টিগুন। এই সকল পুষ্টিউপাদান আপনাকে সারাদিনে সকল শক্তির যোগান দিবে। যার ফলে আপনি থাকবেন সারাদিন কর্মঠ এবং সতেজ। মিল্ক শেকের সকল পুষ্টি উপাদানগুলো নিম্নে সংক্ষিপ্ত আকারে বর্ণনা করা হলো।

মিল্কশেকের প্রটিন

আমরা সকলেই কমবেশি জানি যে দুধ পান করার মাধ্যমে আমাদের শরীরের হাড় গঠনের মজবুত হয়। তবে আপনারা জানেন কি দুধে এক ধরনের প্রোটিন অনু থাকে। আর এই প্রোটিন অনুর নাম হলো হুই। এটি মিল্ক শেকে অনেক বেশি পরিমাণেই থাকে। যার ফলে এই উপাদানটি আমাদের শরীরে প্রবেশের পরে এটি তার সকল কার্যক্রম শুরু করে দেয়।

মিল্কশেকের ফ্যাট

আমাদের সকলের মধ্যে বর্তমানে একটি ভুল ধারণা কাজ করে। সেটি হল ফ্যাট বা চর্বি হলো আমাদের শরীরের জন্য খারাপ। তবে আসলে আমাদের কি এই বিষয়টি জানা উচিত যে সকল ধরনের চর্বি কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য খারাপ না। বিশেষ করে দুধে যে ফ্যাট পাওয়া যায় এই উপাদানটি আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অনেক বেশি সাহায্য করে। বিশেষ করে আরও বেশি সাহায্য করে শীতের সময়ে।

মিল্কশেকের কার্বোহাইড্রেট

মিল্ক শেকের এই উপাদানটি হচ্ছে আরো একটি গঠনমূলক উপাদান। আর এই উপাদানটি সরবরাহ করে চিনি থেকে। আমরা সকলে প্রতিদিন নিয়মিত চায়ের সাথে অথবা কফের সাথে চিনি খেয়ে থাকি। পরিমাণ মতো চিনি আমাদের শরীরের জন্য অনেকটাই ভালো। এই চিনিতে থাকা বিদ্যমান উপাদান আমাদের মস্তিষ্কের সঠিকভাবে কাজ করার জন্য তার তাৎক্ষণিক শক্তি সংগ্রহ করে। আবার এই মিল্ক শেক থেকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও পাবেন।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন-উত্তরঃ-

মিল্ক শেক কি সমৃদ্ধ?
মিল্ক শেক হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ। এই সকল পুষ্টি উপাদানের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন এছাড়াও আরো অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। যার জন্য এটি ছোট বড় সকলের কাছেই অনেক বেশি পছন্দের।

মিল্ক শেক কখন খেলে ওজন বাড়ে?
যাদের শরীরের ওজন অনেকটাই কম রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে মিল্ক শেক খাওয়ার মাধ্যমে ওজন বাড়ানো সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে এটি যেনো অতিরিক্ত পরিমাণে না খাওয়া হয়। তাহলে কিন্তু আরো অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে।

মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম

মিল্ক শেক বাজার থেকে ক্রয় করে নিয়ে এসে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুযায়ি বিভিন্নভাবে পানীয় স্বাদে গ্রহণ করা যায়। মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়মের মধ্যে প্রথমেই যেটি লক্ষ্যণীয় সেটি হলো এটি রাতে ঘুমানোর পূর্বে প্রথমে এক গ্লাস গরম দুধ নিয়ে তার সাথে এক চা চামচ পরিমাণ মিল্ক শেক নিতে হবে। তারপরে এটি ভালো হবে নেরে মিশিয়ে নিয়ে খেয়ে নিতে হবে।

পৃথিবীর বুকে মানুষই একমাত্র এমন ধরনের প্রাণী যারা জন্মের পরে স্তন্যপান করার পরেও তারা দুধ পান করতে পছন্দ করে। পৃথিবীর বুকে মানুষ ছাড়া এমন অন্য কোন স্তন্যপায়ী প্রাণী নেই। তাদের এই দুধ পান করার প্রধান কারণ হলো ভবিষ্যতে উচ্চ পরিমাণ পরিমাণ পুষ্টির যোগান।

আর ঘরে বসেই আপনি এই মিল্ক শেক তৈরি করে নিতে পারবেন বিভিন্ন স্বাদের পানিয় উপাদান ব্যাবহারের মাধ্যমে। তাহলে চলুন এই পর্যায়ে আমরা জেনে নেই কিভাবে ঘরে বসেই সহজেই এবং বিভিন্ন উপাদান দিয়ে কিভাবে মিল্ক শেক তৈরি করে ফেলা যায়।

স্ট্রবেরি মিল্ক শেক

বর্তমান সময়ে আমাদের বাংলাদেশেও এখন এই স্ট্রবেরি অনেকটাই সহজলভ্য হয়ে গিয়েছে। আর এই সহজলভ্য স্টবেরি ব্যাবহার করেই আপনি তৈরি করে নিতে পারবেন আপনার জন্য অধিক পুষ্টি উপাদানের মিল্ক শেক। কিভাবে তৈরি করবেন চলুন জেনে নেই।
মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম
  • প্রথমে ৩ কাপ দুধ নিতে হবে
  • ১ কাপ আপনার পছন্দ অনুযায়ি যেকোন ফ্লেভারের আইস্ক্রিম নিতে হবে
  • ২ কাপ পরিমাণ স্ট্রবেরি কিউপ করে নিতে হবে
  • ১ চা চামচ পরিমাণ স্ট্রবেরি ফ্লেভাব নিতে হবে
এই সকল উপকরণগুলো যোগার করে একসাথে নিয়ে ব্যালেন্ডার দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। আর এভাবেই তৈরি হয়ে গেলো আপনার অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন স্ট্রবেরি মিল্ক শেক। এই শেকটি আপনি প্রতিদিন সকালে পান করতে পারেন। তবে এটা কিভাবে পরিবেশন করে আপনি খাবেন সেটি নিতান্তই আপনার উপর নির্ভর করে।

চকলেট মিল্ক শেক

মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম যদি চকলেট মিল্ক শেক বানিয়ে খাওয়া হয় তাহলে এটি বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি উপকার হবে। তার কারণ হলো তারা সব সময় সব থেকে বেশি সকল খাবার পাওয়া যাবে সেদিকে তাদের আগ্রহ অনেকটাই বেশি থাকে। আপনি চাইলে এই মজাদার চকলেট মিল্ক শেক ঘরে বসে তৈরি করে নিতে পারবেন। কিভাবে তৈরি করবেন আর কোন কোন উপকরণ লাগবে চলুন জেনে নেই।
  • ক্যারামেল আইসক্রিম এর ক্রিম নিন
  • পরিমাণ মতো অথবা দুই কাপ পরিমাণ দুধ নিন
  • একটি কলা নিতে হবে
  • ৩ চা চামচ পরিমাণ আপনার ইচ্ছা মতো ফ্লেভার অথবা ভ্যানিলা ফ্লেভার নিন
  • সব শেষ যে কোন লিকুইডের দুই চা চামচ পরিমাণ চকলেট নিতে হবে
উপরের উল্লেখিত উপকরণগুলো সংগ্রহ করা হয়ে গেলে সবগুলো উপকরণ একসাথে ব্লেন্ডার দিয়ে হালকা পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। ব্যাস! এভাবেই তৈরি হয়ে গেল আপনার চকলেট মিল্ক শেক। এই মিল্ক শেকের স্বাদ যে একবার নিবে তার আর অন্য কোন পানিওর প্রতি আকর্ষণ হবে না।

খেজুরের মিল্ক শেক

বর্তমান সময়ে স্ট্রবেরির পাশাপাশি খেজুর অনেকটাই সহজলভ্য হয়ে যাওয়ার কারণে এটা এখন প্রায় সকলের ঘরে ঘরেই থাকে। আপনি যদি চান তাহলে আপনার হাতের কাছে থাকা বিন্দ্যমানে এই একটি ফল ব্যবহার করে মজাদার একটি খেজুরের মিল্ক শেক তৈরি করে নিতে পারবেন। কিভাবে তৈরি করবেন চলুন এর রেসিপি জেনে নেই।
  • খেজুর কেটে ভেতরে খেজুরের বিচি ফেলে দিয়ে শুধু খেজুর নিতে হবে
  • দুই চা চামচ পরিমাণ কিনে নিতে হবে
  • এক কাপ পরিমাণ আইসক্রিম নিন
  • প্রয়োজন মত ফ্রেশ দুধ পেতে হবে
উপরের উল্লেখিত সকল উপকরণগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে সকল উপকরণ একসাথে ব্লেন্ডারে দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন। এছাড়াও আপনি চাইলে এতে থাকা চিনির পরিমাণ আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে এটি কি হবে পরিবেশন করে আপনি খাবেন সেটি নিতান্তই নির্ভর করে আপনার উপর।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন-উত্তরঃ-

চকলেট শেক খাওয়া কি ভালো?
চকোলেট মিল্কশেকের মধ্যে অনেকটাই ভীতিকর রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। যেটি আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর জন্য অনেকটাই সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও এতে অনেক ভালো পরিমাণে ক্যালোরি, চর্বি, প্রোটিন এবং পুষ্টি পাওয়া যায়।

মিল্ক শেক খেলে কি কোনো সমস্যা হবে?
মিল্ক শেক অথবা বাদামের মিল্ক শেক আপনার ওজন বৃদ্ধি করার জন্য কাজ করবে কিনা সেটি মূলত নির্ভর করে আপনি কতটুকু পরিমাণে ক্যালরি গ্রহণ করছেন তার ওপর। আপনি যদি মিল্ক শেক খাওয়ার সময়ে চিনি, সিরাপ, এবং বিভিন্ন ধরণের ক্রিম যোগ করেন তাহলে এটি অনেক বেশি ক্যালরি সরবরাহ করার ফলে আপনার শরীর কিছুটা মোটা হয়ে যেতে পারে।

মিল্ক শেক এর উপকারিতা কি কি?
মিল্ক শেকের যত ধরণের উপকারিতা রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো যাদের ক্ষেত্রে শরীরের ওজন অনেকটাই কম, আর যারা তাদের ওজন বৃদ্ধি করতে চাচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রে এটি অনেকটাই উপকারি হবে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। আর তাই এতে অধিক পরিমাণে ক্যালরি পাওয়া যায়। তাই শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে অনেকটাই সহযোগিতা করে এটি।

ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম

আপনি সঠিকভাবে মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম বিস্তারিত জানেন কি? ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে কতটুকু পরিমাণে মিল্ক শেক খেতে হবে সেটি একান্তই নির্ভর করে আপনার কতটুকু পরিমাণে ক্যালরি প্রয়োজন হবে তার ওপর। এছাড়াও আপনাকে আরো কিছু বিষয়ের দিকে লক্ষ রেখে খেতে হবে যেমন আপনার যদি ওজন বৃদ্ধি করতে চান, কোন ধরণের কার্যকলাপের জন্য খেতে চান ইত্যাদি।

তবে স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য কোন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ না করেই মিল্ক শেক খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। তাই আপনি যদি শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খেতে চান তাহলে অবশ্যই প্রথমে আপনাকে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করে তারপরে ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম মেনে খেতে হবে। তাহলে চলুন এই বিষয়ের কিছু নিয়ম জেনে নেই।

দিনে একবার মিল্ক শেক

আপনি যেহেতু এই বিষয়ে নতুন তাই আপনি প্রথম প্রথমে দিনে একবার করে ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খেয়ে আপনার জার্নিটা শুরু করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে যদি আপনি স্ন্যাক্স হিসেবে গ্রহণ করতে থাকেন তাহলে আপনাকে আর তেমন একটা বাড়তি কোন প্রকার রুটিন অনুসরণ করতে হবে না। এটি খেতে পারেন আপনি খাবার গ্রহণ করার মাঝবর্তি সময়ে। অথবা ওয়ার্ক আউটের পরবর্তি সময়ে।

আপনাকে অবশ্যই এটি এমন সময়ে গ্রহণ করতে হবে যখন আপনার অনেকটাই অতিরিক্ত পরিমাণের ক্যালরির প্রয়োজন হবে। এটি খাওয়ার সময়ে এর বাড়তি স্বাদ বৃদ্ধি করার জন্য আপনি অতিরিক্তভাবে কোকো পাউডার অথবা ভ্যানিলা এসেন্স কিংবা মধু বা সিরাপের মতো বিভিন্ন উপাদান যোগ করে নিতে পারেন।

শরীরের অগ্রগতি খেয়াল করুন

ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খাওয়ার সময়ে অবশ্যই আপনাকে আপনার শরীরের অগ্রগতির দিকে নজর দিতে হবে। তার পাশাপাশি এটি আপনার শরীরের ওপর কিভাবে প্রভাব বিস্তার করছে সেই বিষয় ও ট্রাক করার চেষ্টা করতে হবে। আর আপনি যদি কোন সঠিক রেজাল্ট বুঝতে না পারেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

সবার শরীরেই সকল কিছু সমানরূপে কাজ করে না। একেক জনের শরীরের ক্ষেত্রে একেক ধরণের প্রভাব ফেলে। কারো শরীরের পুষ্টির চাহিদা কম থাকে, আবার কারো কারো শরীরে পুষ্টির চাহিদা বেশি থাকে। তাই আপনি যদি এখানে সকল দিকগুলো সঠিকভাবে বুঝে নিয়ে তারপরে এর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন তাহলে এখান থেকে আপনি অনেকটাই আশানুরুপ ফল পাবেন।

নিজেকে এক্টিভ রাখুন

আপনি যখন এই ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খাবেন তখন অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন শারীরি ক্রিয়াকলাপের সাথে যুক্ত থাকতে হবে। কেননা আপনি যদি শরীরের ওজন কমাতে অথবা বৃদ্ধি করতে চান তাহলে অবশ্যই পরিশ্রম করাটা অনেক বেশি দরকার। তার জন্য আপনাকে সময় পাওয়া মাত্রই ব্যায়াম করতে হবে।

প্রতিদিন নিয়ম করে আপনাকে হাটাচলার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। যার ফলে আপনার হাত পায়ের পেশি অনেক বেশি পরিমাণে এক্টিভ থাকবে। তবে এই সময়ে আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে শুধু যে ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খাওয়ার ফলেই আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে এমনটা নয়। বরং এর পাশাপাশি আপনাকে অন্য কিছু উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবারও গ্রহণ করতে হবে।

ওয়েট গেইন মিল্ক শেক এর উপকারিতা

বর্তমান সময়ে যেখানে সকলেই অতিরিক্ত স্থূলতার কারণে শরীরের ওজন কমানোর জন্য উদগ্রিব হয়ে বসে আছে, সেখানে এমন অনেকেই রয়েছে যারা তাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে চাচ্ছেন। তবে আপনারা জানলে অবাক হবেন শরীরের ওজন কমানো যেমন কষ্টসাধ্য ঠিক তেমনই ওজন বৃদ্ধি করাও অনেকটাই কষ্টকর। আর এই ওজন বৃদ্ধি করার জন্য প্রতিদিন অনেক রুটিন অনুসরণ করে চলতে হয়।
ওয়েট গেইন মিল্ক শেক এর উপকারিতা
তবে ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম মেনে যদি আপনি মিল্ক শেক খান তাহলে খুব দ্রুতই আপনি শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন। তবে এই ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খাওয়ার ফলেও কিছু উপকারিতা রয়েছে। চলুন তাহলে এবার এর উপকারিতাগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

পেশীর গঠনে সহায়তা করে

আমাদের সকলের শরীরেই প্রটিনের চাহিদা সমান পরিমাণে থাকে না। অনেকটাই কম অথবা বেশি থাকে। আমরা প্রতিদিন যেই সকল খাবার খাই, তার ভেতরে খুব কম পরিমাণেই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার থাকে। তবে আমাদেরকে শরীরের ওজন কমানো অথবা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই সকল উপায় ছাড়াও শরীরের যেনো অন্য সকল পুষ্টির চাহিদাগুলো সঠিকভাবে পূরণ হয় সেদিকেও আমাদেরকে নজর রাখা উচিত।

ওয়েট গেইন মিল্ক শেক এ প্রচুর পরিমাণে উচ্চ মানের প্রটিন থাকে। যা আমাদের মাংশ পেশির ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অ্যামিনো অ্যাসিড সরবরাহ করে। তাই আপনি যদি আপনার শরীরের যথেষ্ট পরিমাণে ওজন বৃদ্ধি করতে চান তাহলে ওয়েট গেইন মিল্ক শেক আপনাকে অবশ্যই বিবেচনার মধ্যে রাখতে হবে।

প্রয়োজনীয় পরিমাণ পুষ্টি উপাদান

ওয়েট গেইন মিল্ক শেকে সাধারণত ভিটামিন, খনিজ উপাদা এবং অন্যান্য সকল প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থেকে থাকে। যেগুলো খুব সহজেই আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদার যোগান দিয়ে থাকে। যখন আপনি শরীরের ওয়েট গেইন করার কথা চিন্তাভাবনা করেন যেই সকল খাবারে পুষ্টি উপাদান নেই বললেই হয়।

আর এই সকল খাবার খাওয়ার ফলে আপনার হতে পারে হিতের বীপরিত। এই সকল ধরণের খাবার গ্রহণের ফলে যদি শরীরের পুষ্টির চাহিদা কমে যায় তাহলে আপনার শরীরে বিভিন্ন ধরণের রোগ ব্যাধি দেখা দিতে পারে। তাই যদি আপনি ওয়েট গেইন করতে চান তাহলে আপনার ক্ষেত্রে ওয়েট গেইন মিল্ক শেক হতে পারে অনেক ভালো একটি চয়েজ।

সময় বাঁচায়

আপনার ওয়েট গেইন করার জন্য আপনি হয়তো গুগল, ইউটিউব দেখে দেখে অনেক কিছু রেসিপি সম্পর্কে জানেন। আর সেই অনুযায়ি হয়তো আপনি রেসিপিও তৈরি করতে চান। কিন্তু সময়ের ওভাবে হয়তো করতে সক্ষম হন না। তাই এইক্ষেত্রে আপনার জন্য অনেক কার্যকরি একটি হলো ওয়েট গেইন মিল্ক শেক। এটি খাওয়ার জন্য আপনাকে কষ্ট করে সময় নষ্ট করে বানাতে হবে না। তাই এক্ষেত্রে আপনার মূল্যবান সময় এবং শ্রম দুটোই বাচবে।

সহজ ও সুবিধাজনক

যেসকল ব্যাক্তিগণ বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় যান তাদের জন্য ওয়েট গেইন করার জন্য বাড়তি কোন সময় বের করা সহজ হয়ে ওঠে না। আপনি যদি প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ওয়েট গেইন মিল্ক শেক যদি রাখেন তাহলে আপনাকে আর এক্সট্রা করে বাড়তি সময় বের করতে হচ্ছে না।

আপনি সকালের অথবা রাতের খাবারের সাথেই এটি স্ন্যাকস হিসাবেও খেতে পারবেন খুব সহজেই। তাই এক্ষেত্রে আপনার অনেকটাই সময় বাচবে। তাই এটি অনেক সহজ এবং সুবিধাজনক।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন-উত্তরঃ-

ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খেলে কি ওজন বাড়ে?
হ্যা, বাদামের মিল্ক শেক খেলে অবশ্যই এটি আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। এর কারণ হলো এটাতে ক্যালোরির পরিমাণ অনেকটাই বেশি থাকে। তাই আপনি যদি ওয়েট গেইন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ওয়েট গেইন মিল্ক শেক খেতে হবে।

ওজন বাড়ানোর জন্য মিল্কশেক কখন খাওয়া উচিত?
মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম মেনে যদি আপনি ওজন বৃদ্ধি করতে চান তাহলে সবথেকে ভালো হয় আপনি যখন ওয়ার্ক আউট করেন তারপরে খেলে। অথবা আপনি রাতে খাবার খাওয়ার পরে এই মিল্ক শেকটি খেতে পারেন।

প্রোটিন শেক কিভাবে ক্যালরি যোগ করে?
অতিরিক্ত পরমাণে ক্যালোরি এবং প্রোটিনের বৃদ্ধি করার জন্য পূর্বে থেকেই রান্না করা যেকোন ঠান্ডা খাদ্য শস্য যেমন ভাত, ওটমিল এবং বার্লি যোগ করা যেতে পারে। এছাড়াও আপনি চাইলে পিনাট বাটার অথবা অন্যান্য সকল বাদাম যোগ করে অথবা মাখন নিয়ে খেতে পারেন।

মিল্ক শেক এর দাম কত বাংলাদেশে

এখন বাজারের সকল দোকানগুলিতে মিল্ক শেক কেজি হিসেবে অথবা লিটার হিসেবে বিক্রি করা হয়ে থাকে। আপনি যদি চান তাহলে আপনি ১০০ গ্রাম থেকে শুরু করে ১০০০ গ্রাম অর্থাৎ ১ কেজি পর্যন্ত কিনতে পারবেন। এখন দোকানে বিভিন্ন দোকানেতে মিল্ক শেক পাওয়া গেলেও এমন হাতে গোনা কয়েকটা দোকান রয়েছে যেটাতে অনেক বেশি পরিমাণে মিল্ক শেক পাওয়া যায়। তাও আবার বড় দোকান হলে।

মিল্ক শেক সঠিক নিয়ম অনুযায়ি খাওয়ার ফলে এটি আমাদের দৈনন্দিন পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে থাকে। আর এই জন্যই এই পণ্যটির দাম তুলনামূলক একটু বেশিই হয়ে থাকে। আপনারা যারা মিল্ক শেক এর দাম কত বাংলাদেশে সম্পর্কে খুঁজছেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলের এই অংশটি। এই অংশের ভেতরে আমরা সকল কম্পানির মিল্ক শেকের দামের ধারণা তুলে ধরবো।

আশা করছি আপনারা বর্তমান বাজারে পাওয়া যায় এমন কিছু মিল্ক শেকের দাম সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন এখান থেকে। আপনার হাতের নিকটে যেই সকল সুপার শপ রয়েছে সেখান থেকে এই মিল্ক শেকগুলো ক্রয় করতে পারবেন। তো বন্ধুগন চলুন এখন আমরা ছকের মাধ্যমে সকল কম্পানির মিল্কশেকের মূল্য দেখে নেই।

কম্পানির নাম

ওজন

দাম

স্বাদ চকোলেট ড্রাই ফ্রুট মিল্কশেক পাউডার 100GMS

১ কেজি 

৪০০ টাকা

চকোলেট মিল্ক শেক

২২০ মিলি

৩৫ টাকা

পানামা ফুডস মিল্ক শেক

১ কেজি 

৮২০ টাকা

মাল্টেসার । চকোলেট মিল্ক শেক ড্রিংক

৩৫০ মিলি

৭০০ টাকা

প্রাকৃতিক ভ্যানিলা ফ্লেভার মিল্কশেক

১ কেজি 

৬৫০ টাকা

স্যাভরি মিল্কশেক প্রিমিক্স ভ্যানিলা

১০০ গ্রাম

১৮০ টাকা

ইনস্ট্যান্ট আনারস মিল্ক শেক

২৫ গ্রামের বক্স

৬৫ টাকা

মিল্কি ওয়ে চকলেট মিল্ক শেক ড্রিংক

৩৫০ মিলি

৮০০ টাকা

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন-উত্তরঃ-

মিল্ক শেক পাউডার এর দাম কত?
বাজারে মিল্ক শেক বিভিন্ন দামের পাওয়া যায়। প্রতি কেজি ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। তবে আপনি যদি একটু ভালো মানের মিল্ক শেক খেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার উচিত হবে ১০০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে ক্রয় করা।

লেখকের মন্তব্য

আমাদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য আমাদেরকে প্রতিদিন নিয়মিত ভালো মানের পানিয় খাওয়া উচিত। কিন্তু মজার বিষয় হলো বর্তমান সময়ে মানুষ স্বাস্থ্য বিষয়ে অনেক সচেতন হয়েছে। তাই তারা পানিয় এর পরিবর্তে দুধ, মিল্ক শেক খেতে বেশি পছন্দ করে। আবার অনেকে রয়েছেন যারা দুধের পরিবর্তে ফলের জুস খেতেও অনেক বেশি পছন্দ করে থাকে।

মিল্ক শেক খাওয়ার নিয়ম জেনে যদি সঠিকভাবে মিল্ক শেক খাওয়া হয় তাহলে অবশ্যই আপনার স্বাস্থ্যে অনেক বেশিই উন্নতি হবে। এছাড়া যদি আপনি মিল্কশেকের পাশাপাশি অনেকগুলো ফলমূল দিয়ে ফলের জুস তৈরি করে খান তাহলেও সেটি অনেক উপকারে আসবে। আপনার বন্ধুদেরকে এই বিষয়ে অবগত করার জন্য তাদের সাথেও শেয়ার করতে পারেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post